ঢাকা: ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, বিরল নিউরোডিজেনারেটিভ রোগ স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফিতে (এসএমএ) আক্রান্ত রাইয়ান এখন অনেকটা সুস্থ। শিশু রাইয়ান বর্তমানে তার মা বাবার সঙ্গে মানিরকগঞ্জে নিজ বাড়িতে আছে।
ডা. জহিরুল হক বলেন, রাইয়ান তার শরীর এখন আগের চেয়ে ভালোভাবে নড়াচড়া করতে পারছে। গত ২৫ অক্টোবর রাইয়ানকে থেরাপির এই ইনজেকশন দেয়া হয়। চলতি বছর গত ২১ নভেম্বর তাকে নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ফলোআপের জন্য আবারো আনা হয়।
রাইয়ানকে সরাসরি তত্ত্বাবধান করছেন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের ডা. জোবাইদা পারভীন। তিনি বলেন, রাইয়ানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। আগে হাত নাড়াতে পারলেও মাথার উপর নিতে পারত না। এখন মাথার ওপরে হাত তুলতে পারছে। রাইয়ান আগে শোয়া অবস্থায় কাত হতে পারত না, এখন তা পারছে।
তিনি বলেন, রাইয়ানের বাড়ি মানিকগঞ্জে হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে রাইয়ানের মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রাখছেন ডা. জুবাইদা। তবে তার মাকে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি শিখিয়ে দেয়া হয়েছে। তার মা বাড়িতে বসেই এসব থেরাপি দিচ্ছেন। তবে রাইয়ানের পরিপূর্ণ সুস্থ হতে সময়ের প্রয়োজন।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, নিয়মিত ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলে আস্তে আস্তে রাইয়ান হাঁটতে শিখবে বলে প্রত্যাশা এ চিকিৎসকের। দেশে এবারই প্রথমবারের মতো ‘স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি’ (এসএমএ) রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়েছিল জিন থেরাপি।
রাইয়ানই প্রথম রোগী যাকে এই চিকিৎসা দেয়া হয়। রাইয়ানকে যে ওষুধ দেয়া হয়েছে তার প্রতি ডোজের দাম প্রায় ২২ কোটি টাকা। যা বিনামূল্যে দিয়েছে বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নোভার্টিস। এই জিন থেরাপি ইউএসএফডিএ (ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) অনুমোদিত।
উল্লেখ্য,স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি একটি বিরল ও জটিল স্নায়ুতন্ত্রের জন্মগত রোগ, যা জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত হলে সাধারণত শিশুর ঘাড় শক্ত হয় না। তারা বসতে পারে না। তবে কথা বলতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে কারণ বুদ্ধি স্বাভাবিক থাকে। কিন্তু শরীরের নড়াচড়া কম থাকে, ঘন ঘন শ্বাসকষ্ট হয়। শ্বাসকষ্টের কারণে শ্বাসের জন্য যে মাংসপেশি তা দুর্বল হয়ে যায় এবং একপর্যায়ে মারা যায় এ রোগে আক্রান্ত শিশু।
এদিকে রাইয়ানের সার্বক্ষনিক স্বাস্থ্যের খোজঁখবর রাখা নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসক ডা. জুবাইদার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি সুইচ অফ বলায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। আমাদের সময়.কম