Home অর্থনীতি
Category:

অর্থনীতি

ঢাকা: বিবিসি বাংলা প্রতিবেন:: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের মানুষ যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন গ্যাস ও বিদ্যুতের অতিরিক্ত দাম নিয়ে সংসারের হিসাব সমন্বয় করতে তারা গলদঘর্ম হচ্ছেন।

গত একবছরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, বহু পরিবারে শুধু বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল বাবদ খরচ ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন সীমিত আয়ের মানুষ।

শহর ও গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, জিনিসপত্রের এরকম মূল্যবৃদ্ধি তাদের জীবনযাপন কঠিন করে তুলেছে।

নতুন চাপ বিদ্যুতের দাম

জানুয়ারি মাসে এক দফা বাড়ানোর পর ফেব্রুয়ারির এক তারিখ থেকেই আরেক দফা বাড়ছে বিদ্যুতের দাম। ফলে শুধু আবাসিক বিদ্যুৎ বাবদ মাসিক খরচ ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে।

এর আগে সর্বশেষ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছিল ২০২০ সালের শুরুতে।

এখন সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হতে পারে।

ঢাকার বাসিন্দা শাহনাজ চৌধুরীর বলছেন, ‘’হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি, তাও মাসে বিল আসে দেড়- হাজার, দুই হাজার টাকা। টিভি, ফ্রিজ তো বন্ধ করেও রাখতে পারি না। এখন সরকার বিল আরও বাড়িয়েছি, কারেন্টের বিল তো আমার বাজেট ছাড়িয়ে যাবে।’’

ঢাকার কলাবাগানের এই বাসিন্দা বলছেন, নানারকম কাটছাঁট করার পরেও গত এক বছরে তার সাংসারিক খরচ দেড়গুণ বেড়ে গেছে। কারণ বাজারের প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে।

‘’এক বছর আগেও যে দামে আটা-চিনি কিনতাম, এখন তার দ্বিগুণ হয়ে গেছে। চাল, ডাল, তেল- প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে। আমাদের আয় তো সেই হিসাবে বাড়েনি। সংসারে আর কোন আইটেমটা বাদ দেবো? এদিকে ছেলেমেয়ের স্কুলের পড়ার খরচ বেড়েছে, যাতায়াত খরচ বেড়েছে, বাড়িভাড়া বেড়েছে,’’ তিনি বলছিলেন।

বাংলাদেশের সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে, ভর্তুকি কমাতে এখন থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুৎ খরচ সমন্বয় করা হতে পারে।

শাহনাজ চৌধুরীর মতো অনেকের আশঙ্কা, বিদ্যুৎ চার্জ বাড়ার কারণে হয়তো এখন পানিসহ অন্যান্য খরচও বেড়ে যাবে।

শাহনাজ চৌধুরীর মতো বরগুনার বাসিন্দা লায়লা আঞ্জুমানের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে গ্যাসের সিলিন্ডার।

রাতারাতি বেড়ে গেছে গ্যাসের দাম

মাত্র এক সপ্তাহ আগেও ১২ কেজির যে এলপিজি গ্যাসের সিলিন্ডার তিনি ১৩০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন, দুইদিন আগে সেটাই তাকে কিনতে হয়েছে ১৭০০ টাকা দরে।

‘’কোন কারণ বুঝতে পারছি না। সরকারের নির্ধারিত দাম আছে তেরশোর নিচে, তাও সেটা দিতাম। এখন দোকানদাররা বলছে, ১৭০০ টাকার নিচে সিলিন্ডার নেই,’’ বলছিলেন লায়লা আঞ্জুমান।

এমনকি লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপি গ্যাসের দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও বরাবরই অভিযোগ ওঠে যে, বাজারে এর চেয়ে অনেক বেশি দাম নেয়া হচ্ছে।

কিন্তু এখন এলপিজি গ্যাসের দাম যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে।

‘’সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। গ্যাসেরও দাম এমন বেড়েছে যে, এখন চাইলেই যে আলু সিদ্ধ করে খাবো, তারও উপায় নেই,’’ অনেকটা রসিকতা করেই তিনি বলছিলেন।

একটি এলপিজি সিলিন্ডার বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার আবু জাফর বলছেন, ‘’মার্কেটে সিলিন্ডারের সাপ্লাই কম আছে। কোম্পানি থেকে নাকি মাল আসছে না। আমাদেরও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে বিক্রিও করতে হয় বেশি।‘’

শাহনাজ চৌধুরীর বাসায় প্রতিমাসে ১২ কেজির একটি এলপিজি সিলিন্ডারে ২০ থেকে ২২ দিন চলে। অর্থাৎ মাসে তাকে দেড়টা করে গ্যাসের সিলিন্ডার কিনতে হয়।

‘’মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে সিলিন্ডারের দাম চার/পাঁচশো টাকা বেড়ে গেছে। দেখার কেউ নাই। এখন আমাদের তো না কিনেও উপায় নেই, তাহলে রান্না-বান্না বন্ধ হয়ে যাবে। এখন সংসারের আরেক খরচের কাটছাঁট করতে হবে,’’ তিনি বলছেন।

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে এর আগেই তিনি সংসারের বেশ কিছু খরচ বাদ দিয়েছেন।

‘’গত কয়েকমাসে শখের কোন জিনিসপত্র কিনিনি,তাহলেই বোঝেন কিভাবে সংসার চালাচ্ছি, ‘’ তিনি বলছেন।

তবে বাজারে এলপিজি গ্যাসের কোন সংকট নেই বলে বলেছেন বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সচিব ব্যারিস্টার মোঃ খলিলুর রহমান খান একটি পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমাদের কাছে গ্যাসের সংকটের কোন তথ্য নেই। বরং দেশে যথেষ্ট পরিমাণে এলপিজি মজুত আছে।

যদিও এলপিজি ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আরও অনেক খাতের মতো ঋণপত্র খোলা নিয়ে জটিলতায় পড়েছেন এলপিজি অপারেটরগুলো। বিশেষ করে ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো বেশি সংকটে পড়েছে। এই কারণে সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এই কারণে আগেভাগেই দাম বাড়াতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

‘মানুষের কষ্ট বাড়ে’

বাংলাদেশে গত বছর রেকর্ড পরিমাণে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর খাদ্যদ্রব্য, পরিবহন থেকে শুরু করে সব জিনিসপত্রের দাম একদফা বেড়েছে।

তার ওপর ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি নির্ভর অর্থনীতির বাংলাদেশে প্রায় সব জিনিসের দাম বেড়েছে, যার ভুক্তভোগী হচ্ছেন সীমিত বা নিম্ন আয়ের আয়ের সাধারণ মানুষ।

মনোয়ারা বেগম তিনটা বাসায় কাজ করেন। এক বছর আগেও সেই আয়ে তার চলে যেতো। কিন্তু এখন আর তার পক্ষে কোনমতেই সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছে না।

‘’ডেইলি জিনিসের দাম বাড়ে, আমাদের বেতন তো ডেইলি বাড়ে না। মাছ, মাংস বাদ দিলাম, সবজি খাওয়াও তো কঠিন এখন। এই যে গ্যাসের দাম বাড়াইছে, বিদ্যুতের দাম বাড়াইছে, এখন তো আমাগো বাড়িঅলা ভাড়াও বাড়াবে। কয়দিন শহরে থাকতে পারবো জানি না’’ বলছিলেন মনোয়ারা বেগম।

তিন বাসায় কাজের ফাঁকে এখন তিনি টিসিবির গাড়ি থেকে পণ্য কেনার জন্য আলাদা সময় বরাদ্দ রাখেন। বিকল্প হিসাবে তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি গোলাম রহমান বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেশি। তার সাথে সাথে যদি বিদ্যুতের, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়,তাহলে মানুষের কষ্ট বাড়ে এবং তাদের জীবনমানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।‘’

তিনি বলছেন, বিশেষ করে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সাথে অনেক কিছুর সম্পর্ক আছে। ফলে এসব জিনিসের যখন দাম বাড়ে, তখন অন্যান্য পণ্যের দামও বেড়ে যায়।

‘’গত বছরের মূল্যস্ফীতির যে রিপোর্ট, তাতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়েছে, গত বছর যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হল, তখন থেকেই দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করেছে। জিনিসপত্রের দাম এমনভাবে বাড়ছে যে, মানুষ পাল্লা দিয়েও খাপ খাইয়ে নিতে পারছে না।‘’

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: আমাদের সময়:: বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেয়া বিষয়টি অনুমোদন করায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ ঋণ অনুমোদনের মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হলো যে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ ঋণ অনুমোদন করায় প্রমাণিত হলো, আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাগুলো শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে এবং অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভালো।

তিনি আরও বলেন, অনেকেই সন্দেহ পোষণ করেছিলেন যে আইএমএফ হয়তো বা আমাদের এ ঋণ দেবে না। তারা ভেবেছিল আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক এলাকাগুলো দুর্বল, তাই আইএমএফ এ ঋণ দেয়া থেকে বিরত থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, আমরা অবশ্যই আইএমএফের প্রতি এ ঋণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিশেষ করে আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আন্তোয়নেট মনসিও সায়েহ এবং মিশন প্রধান রাহুল আনন্দসহ এ ঋণের বিষয়ে যা বাংলাদেশ সফর করেছিলেন তাদের প্রতি জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

এছাড়া অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা যারা এ ঋণ প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করেছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বিবিসি বাংলা:  বাংলাদেশে গত কয়েক মাস ধরেই ডলার সংকট, জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে দেশের বেশ কয়েকটি প্রধান শিল্প ও উৎপাদন খাতে। ডলার সংকটের কারণে গত বছরের মাঝামাঝি আমদানির ওপরে বেশ কিছু কড়াকড়ি আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ডলার না থাকার কারণে অনেক বাণিজ্যিক ব্যাংকও আমদানিতে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বা ঋণপত্র খুলতে পারছে না।

এরফলে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন আমদানিকারকরা। কারণ আমদানি নির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে খাদ্যদ্রব্য থেকে শুরু করে যন্ত্রপাতি- বেশিরভাগ পণ্যই আমদানি করা হয়।

এসব শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়েও জটিলতার মুখোমুখি হচ্ছেন কারখানা মালিকরা।

সেই সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বেড়েছে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ।

সম্প্রতি শিল্পে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পর বেড়েছে কারখানায় উৎপাদন খরচ।

এ কারণে সংকটে পড়েছেন দেশীয় অনেক উৎপাদক প্রতিষ্ঠান।

দেশীয় বাজারে একদিকে এসব পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করেছে, সেই সঙ্গে কাঁচামাল আমদানি নিয়ে জটিলতায় উৎপাদন অব্যাহত রাখাও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে।

ওষুধ: ডলার ও গ্যাস দাম বাড়িয়ে দিতে পারে মূল্য

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় ওষুধের ৯৮ শতাংশ দেশেই উৎপাদন করা হচ্ছে। তৈরি পোশাক শিল্পের পর বাংলাদেশে ওষুধ শিল্পকে অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য হিসাবে বিবেচনা করছে সরকার।

কিন্তু এই শিল্পের কাঁচামালের আশি থেকে ৮৫ শতাংশ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

প্রতিবছর এই খাতে এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের কাঁচামাল আমদানি করতে হয়।

একটি ওষুধ প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান কসমো ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক মোহাম্মদ আলী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, অনেক কোম্পানি সময় মতো কাঁচামাল আমদানি করতে পারছে না।

তিনি বলেন, “এমনকি হান্ড্রেড পার্সেন্ট মার্জিন দেয়ার পরেও এলসি খোলা যাচ্ছে না। আবার অনেক আমদানিকারক হয়তো কাঁচামাল এনেছেন, কিন্তু বন্দর থেকে সময় মতো খালাস করতে পারছে না। কারণ ব্যাংক এলসি নিষ্পত্তি করতে পারে না। ফলে অনেক কারখানায় ওষুধ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।‘’

তিনি বলছেন, এসব কারণে ওষুধ উৎপাদনে কোম্পানিগুলোর খরচ বেড়ে যাচ্ছে।

আগে বিভিন্ন দেশ থেকে যে দামে তারা কাঁচামাল আমদানি করতেন, ডলারের বিনিময় মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে তাদের সেখানেও তাদের খরচ বেড়েছে।

ওষুধ

ওষুধ প্রস্ততকারক একটি কোম্পানির কর্মকর্তারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, আপাতত উৎপাদন চালিয়ে যাওয়ার মতো কাঁচামাল তাদের কাছে রয়েছে।

কিন্তু নতুন কাঁচামাল আনতে হলেই তারা বিপদে পড়বেন। কারণ এর মধ্যেই দুটি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তারা এলসি খুলতে পারেননি।

কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির কারণে গত বছর বাংলাদেশে ওষুধের দাম এক দফা বেড়েছিল।

এখন ব্যবসায়ীরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, গ্যাস ও পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং ডলারের বিনিময় মূল্যের কারণে খুব তাড়াতাড়ি ওষুধের আরেক দফা মূল্যবৃদ্ধি ঘটতে পারে।

সিমেন্ট খাত: ঋণের খরচ বেড়েছে ২০ শতাংশ

ওষুধ শিল্পের মতোই প্রভাব পড়েছে দেশের আরেকটি বড় শিল্পখাত সিমেন্ট শিল্পে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই তাদের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

গ্যাসের সংকটের কারণে তারা নিজেরাও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছেন না।

সেই সঙ্গে গ্যাসের এবং তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বেড়ে গেছে তাদের উৎপাদন খরচ।

ডিসেম্বর মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সিমেন্ট প্রস্ততকারক সমিতির (বিসিএমএ) নেতারা দাবি করেন, ডলারের বাড়তি দামের কারণে তাদের ঋণের খরচ ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে।

ফলে চলতি মূলধন সংকটে পড়েছে সিমেন্ট শিল্প।

মার্কিন ডলার কীভাবে বিশ্ব অর্থনীতি আধিপত্য করছে, এর ভবিষ্যত কী?

বিসিএমএ সভাপতি মোঃ আলমগীর কবির ওই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বছরের শুরুতে তারা কাঁচামাল কেনার সময় ৮৬-৮৭ টাকা ডলার ধরে ঋণপত্র খুলেছেন।

সেই হিসাবে পণ্য বিক্রি হয়েছে।

কিন্তু এখন ঋণপত্র নিষ্পত্তি করতে গিয়ে তাদের ডলার প্রতি ১০৬ থেকে ১১২ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।

ফলে অনেক মালিকের বড় ধরনের মূলধন ঘাটতিতে পড়েছেন।

আলমগীর কবির বলেন, ‘’কাঁচামাল আমদানি করতে গিয়ে ঋণপত্র খুলতে গিয়েও আমাদের অনেক বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে।

অনেক ছোট ছোট উৎপাদক দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও ব্যাংক থেকে ঋণপত্র খুলতে পারছেন না। ফলে তাদের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগাড় হয়েছে।‘’

হালকা প্রকৌশল শিল্প: দাম বেড়েছে বিক্রি কমেছে

বাংলাদেশে গাড়ির ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে কৃষি ও নির্মাণ কাজের যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিক পণ্যের ছাঁচ, নাট-বল্টু, বেয়ারিং ইত্যাদি অনেক এখন দেশেই তৈরি করা হয়।

কিন্তু গত এক বছর ধরে দেশের আরও অনেক শিল্প খাতের মতো এই শিল্পও সংকটের মুখোমুখি হয়েছে।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের যন্ত্রাংশ প্রস্ততকারক একটি ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা শোভন সাহা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ লাগার পর থেকেই কাঁচামালের দাম হুহু করে বাড়তে শুরু করেছিল, এখন তা অর্ধেক ছাড়িয়ে গেছে।

এরপর ডলারের দাম বেড়ে আমার খরচ আরও বেড়েছে। আমরাও বাধ্য হয়ে যন্ত্রাংশের দাম বাড়িয়েছি। কিন্তু টুলসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন বিক্রি কমে গেছে।‘’

হালকা প্রকৌশল শিল্প

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব শিল্পের জন্য প্রধানত চীন থেকে কাঁচামাল আনা হয়।

অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ আমদানি করে বাংলাদেশে গাড়ির যন্ত্রাংশ, ধান মাড়াই মেশিন, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, নানারকম খেলনা তৈরি করা হয়।

কিন্তু গত কয়েকমাস ধরে ঋণপত্র খুলতে না পারার কারণে অনেক কারখানা তাদের কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।

বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে।

‘’এদিকে ডলারের দাম বাড়ার কারণে কাঁচামালের দাম বেড়েছে। আগে চীন থেকে একটা কন্টেইনার আনতাম এক হাজার ডলারে, এখন লাগে চার হাজার ডলার।

তারপরেও ঋণপত্র খোলা যায় না। কাঁচামাল আনতে না পেরে অনেক ফ্যাক্টরিতে ঠিক মতো কাজ হচ্ছে না,‘’ বলেন তিনি।

বাংলাদেশে এই সমিতির সদস্য সংখ্যা তিন হাজার ২০০। কিন্তু সারা দেশে এরকম অর্ধ-লক্ষ্যাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে নেতারা বলছেন।

গত অর্থবছরে এই খাত থেকে ৭৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল।

কিন্তু চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ২৬ কোটি ডলারের পণ্য।

ডলারের ব্যবহার কোথায় ও কীভাবে হয় বাংলাদেশে?

চামড়া শিল্প: ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় ব্যবসায়ীরা

বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই খাতের চামড়া দেশের ভেতর থেকে সংগ্রহ করা হলেও, প্রক্রিয়া করার জন্য দরকারি রাসায়নিক বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

কিন্তু সেটা করতে গিয়ে আরও অনেক খাতের মতো ব্যাংকে ব্যাংকে ঘুরতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদেরকেও।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের মুখে বাংলাদেশের সরকার খাদ্য-পণ্যের মতো জরুরি খাতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এলসি খোলার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

সেই সঙ্গে রপ্তানিমুখী খাতগুলোকেও অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানিয়েছে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, খাদ্য-পণ্য এবং রপ্তানি মুখী পণ্য উৎপাদকদেরও কাঁচামাল আনতে গিয়ে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে।

ব্যাংকাররা বলছেন, যে হারে এলসি খোলার চাহিদা রয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রা না থাকার কারণে চাইলেও তারা সেটা খুলতে পারছেন না।

দেশি চামড়ার জুতো

বাংলাদেশে ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মোঃ শাখাওয়াত উল্লাহ বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ‘’চুন, লবণ আর সালফিউরিক এসিড- এই তিনটা ছাড়া আর সব কাঁচামাল আমাদের বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।

কিন্তু এখন একটা এলসি খুলতে অনেক ঘোরাঘুরি করতে হয়। অনেক ছোট ব্যবসায়ী ঠিকমতো খুলতেও পারছে না’’ অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘’আমাদের সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হলো, সামনের কোরবানির সময় আমাদের দেশের ৬০ থেকে ৭০ পার্সেন্ট চামড়া সংগ্রহ হয়।

তার আগেই আমাদের কাঁচামাল নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু এখন দেখছি রোজার খাদ্য-পণ্য আমদানিতেই ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না। আমরা কি করবো, এটা ভেবে চিন্তায় আছি,‘’ তিনি বলছেন।

কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের আরেক দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে কারখানায় বিদ্যুৎ আর গ্যাস না থাকা।

বাংলাদেশে অব্যাহত বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের প্রভাব পড়ছে নানা খাতে
বাংলাদেশে অব্যাহত বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের প্রভাব পড়ছে নানা খাতে

মুদ্রণ শিল্প: ডলারের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বইয়ের দাম

ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে অমর একুশে বই মেলা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

কিন্তু কাগজের সংকট আর চড়া দামের কারণে এই বছর বই কতটা বিক্রি হবে,তা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে ব্যবসায়ীদের।

প্রকাশক ও মুদ্রণ ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত এক মাসে বাজারে কাগজের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এমনকি বেশি টাকা দিলেও ভালো মানের কাগজ মিলছে না।

বাংলাদেশে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ‘’কিছুদিন আগেই পাঠ্যবই প্রকাশের বড় একটা চাপ গেল।

এখনো সে কাজ চলছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় ভালো কাগজের সংকট আছে। এমনকি বেশি টাকা দিয়েও অনেক প্রকাশক কাগজ পাচ্ছেন না।‘’

আগামী প্রকাশনীর প্রকাশক ওসমান গণি বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, অনেক বেশি টাকা দিয়ে কাগজ কিনতে হচ্ছে।

“প্রতি রিমের দাম তিনমাস আগের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এখন তো বলা যায়, প্রতি সপ্তাহে কাগজের দাম বাড়ছে। জুলাই পর্যন্ত ছাপা হওয়া বইয়ে আমি যে দাম রেখেছিলাম, এরপরে ছাপা বইয়ে অন্তত ২৫ শতাংশ বাড়াতে হয়েছে,‘’ বলেন তিনি।

মি. গনি আশঙ্কা করছেন, বাড়তি দামের কারণে এবারের বইমেলায় বই প্রকাশের সংখ্যাও কমতে পারে।

বই মেলা

প্রকাশকরা বলছেন, গত জুলাই মাস থেকে যখন ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে, তখন থেকেই কাগজের দামও বাড়তে শুরু করে।

বাংলাদেশে মূলত দুই ধরনের কাগজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

বইপত্র ছাপানো বা পড়াশোনার কাজে হালকা কাগজ ব্যবহৃত হয়। এর পুরোটাই দেশীয় কারখানায় উৎপাদিত হয়। এখন এই খাত সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে।

অন্যদিকে ক্যালেন্ডার, প্যাকেজিং বা গার্মেন্টস শিল্পে ভারী কাগজ দরকার হয়। এটা দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হয়ে থাকে।

এখন বাজারে উভয় ধরনের কাগজের সংকট তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের কাগজ কারখানাগুলোর কাঁচামাল বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।

কিন্তু ডলারের দাম দেড়গুণ হয়ে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের আগের আমদানি করা পাল্পের জন্য বেশি মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে।

ফলে অনেকে চলতি মূলধন সংকটে পড়েছেন।

আবার ডলার না থাকায় নতুন করে কাগজ আমদানিতে ঋণপত্র খুলতে রাজি হচ্ছেনা ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এবং এফবিসিসিআই পরিচালক শফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া বিবিসি বাংলাকে ডিসেম্বর মাসে বলেছিলেন, তার আগের দুইমাস ধরে তারা এলসি খুলতে পারছেন না।

ব্যাংকের কাছে গেলেই তারা আমাদের রিফিউজ করে দিচ্ছে। মূলত ডলার সংকটের কারণেই বাজারটা অ্যাফেক্টেড হয়ে গেছে।‘’

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বিবিসি প্রতিবেদন:: বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির জন্য এ সপ্তাহটা ছিল রোলারকোস্টারের মতো। নিজের চোখের সামনেই তিনি দেখলেন তার প্রায় ২৫০০ কোটি ডলারের ব্যক্তিগত ধনসম্পদ উধাও হয়ে গেছে।

গত তিন বছরে তার বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম দশগুণ বেড়ে যাওয়ায় ৬০ বছর বয়সী এই ভারতীয় ব্যবসায়ী এশিয়ার সবচেয়ে ধনী এবং বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তিতে পরিণত হন।

কিন্তু এ সপ্তাহেই নিউইয়র্ক-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের বিতর্কিত এক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যে ধস নামে।

বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে পাওয়ার জন্য আদানি গ্রুপ এখন যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছে।
কিন্তু কে এই গৌতম আদানি? কেমন করে তিনি এতো ধনসম্পদের মালিক হলেন, এবং কেনই বা তার বিশাল বাণিজ্যিক সাম্রাজ্য এরকম ঝড়ের মুখে পড়ল?

মধ্যবিত্ত পরিবার

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের ব্যবসায়ী গৌতম আদানি স্কুলে লেখাপড়া শেষ করেন নি ।

এর পর তিনি তার পিতার গার্মেন্টস ব্যবসায় যোগ না দিয়ে, হীরার ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন।

আরো পরে তিনি তার ভাইয়ের প্লাস্টিক কারখানা পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেন।

১৯৮৮ সালে তিনি আদানি এক্সপোর্টস নামের একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন- যা পরে আদানি এন্টারপ্রাইজেসে পরিণত হয়। তার বিভিন্ন কোম্পানির মধ্যে এটিই মুখ্য প্রতিষ্ঠান।

আজকের দিনে ভারতীয় তিনটি বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গৌতম আদানি এন্টারপ্রাইজেস একটি। এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা রয়েছে।

গৌতম আদানির বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ভারতে সমুদ্র বন্দর ও বিমানবন্দর পরিচালনাকারী বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সর্ববৃহৎ কোম্পানি, সিমেন্ট উৎপাদনকারী দ্বিতীয় বৃহৎ প্রতিষ্ঠান।

আদানি গ্রুপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে যে মি. আদানি হচ্ছেন প্রথম প্রজন্মের ব্যবসায়ী যার চোখে “দেশ গঠনের জন্য কল্যাণকর প্রবৃদ্ধি অর্জনই মূল দর্শন।”

এই গ্রুপের পরিচালিত অনেক শিল্প প্রতিষ্ঠান ভারত সরকার বেশ ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৩ সালে গোয়ায় গৌতম আদানির ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন। সেসময় বিজেপি নেতা মি. মোদী ছিলেন গুজরাট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

সমালোচকরা বলেন যে ২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর আদানি গ্রুপ জাহাজ চলাচল ও বিমানবন্দর পরিচালনার বেশ কয়েকটি বড় ধরনের কাজ পায়।

বিরোধী দলগুলো এসব ঠিকাদারি কাজকে স্বজনপ্রীতির প্রমাণ হিসেবেও উল্লেখ করেছে।

মি. আদানি এসব অভিযোগ দৃঢ়তার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এসব কাজের টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই তার কোম্পানি এসব কাজ পেয়েছে।

আদানি ও মোদী
নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মি. আদানির ধনসম্পদ ২০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

“আমি আপনাদের বলতে চাই যে আপনি তার (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) কাছ থেকে ব্যক্তিগত কোনো সুবিধা নিতে পারবেন না,” ইন্ডিয়া টিভিকে বলেন মি. আদানি।

“নীতিমালা নিয়ে আপনি তার সঙ্গে কথা বলতে পারেন, দেশের স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে পারেন, কিন্তু এসব নীতিমালা সবার জন্যই তৈরি করা হয়েছে, শুধুমাত্র আদানি গ্রুপের জন্য নয়,” বলেন তিনি।

তবে ভারতে যে দ্রুত গতিতে মি. আদানির ধনসম্পদ বেড়ে উঠেছে, তা নিয়ে দেশটিতে কথাবার্তা হচ্ছে।

নরেন্দ্র মোদী যখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, সেসময় গৌতম আদানির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭০০ কোটি ডলার। কিন্তু এই সম্পদ বাড়তে বাড়তে গত বছর ১৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

এই হিসাব ভারতের লাখ লাখ মানুষের অবস্থার একেবারে বিপরীত। দেশটিতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও, ৬০% মানুষ দৈনিক ৩.২০ ডলারের নিচে আয় করে, যে উপার্জনকে বিশ্বব্যাংক দারিদ্রের সীমা হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসনামলের প্রথম সাত বছরে মাথাপিছু আয় ৫০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে।

যে রিপোর্টের কারণে ধ্বস

বিনিয়োগ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চ বুধবার তাদের রিপোর্টে মি. আদানির বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে “কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির” অভিযোগ করেছে।

নিউ ইয়র্ক-ভিত্তিক এই কোম্পানির “শর্ট-সেলিং” এর ব্যাপারে বিশেষত্ব রয়েছে। এই পদ্ধতিতে কোনো কোম্পানির শেয়ারের মূল্য পড়ে গেলে, সুবিধা অর্জনের জন্য, ওই শেয়ারের ব্যাপারে আর্থিক অবস্থান নিয়ে থাকে।

হিনডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টে মরিশাস এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মতো বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে বিভিন্ন কোম্পানিতে আদানি গ্রুপের মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

রিপোর্টেও এও দাবি করা হয় যে আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির “উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঋণ” রয়েছে – যা পুরো গ্রুপটির আর্থিক ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলেছে।

প্রতিবেদনে আরো অভিযোগ করা হয় যে ভারতে লেনদেন হওয়া শেয়ারের মূল্য নিজেদের পক্ষে নির্ধারণ করার জন্য এসব অফশোর কোম্পানিগুলোকে ব্যবহার করা হয়েছে।

আদানি গ্রুপ অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে এই রিপোর্টের প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগও তারা অস্বীকার করেছে।

“পরিষ্কারভাবে, আদানি গ্রুপের কোম্পানির শেয়ার মূল্যের ওপর এই রিপোর্ট এবং তার অসমর্থিত তথ্যের ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে। হিনডেনবার্গ রিসার্চ নিজেরাই স্বীকার করেছে যে আদানির শেয়ার পড়ে যাওয়া থেকে তারা লাভবান হবে,” বলছে আদানি গ্রুপ।

মি. আদানি এই হিনডেনবার্গ রিসার্চের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দিয়েছেন।

এর পরপরই হিনডেনবার্গ তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে যে তারা এবিষয়ে আদালতে লড়াই করতে প্রস্তুত।

সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়

এই রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর আদানি গ্রুপের সম্পদের মূল্য ৪৮০০ কোটি ডলার কমে গেছে।

এর ব্যাপক প্রভাবের কারণে শুধু ভারতে নয়, তার বাইরেও এই রিপোর্টের প্রভাব পড়তে পারে।

ভারতীয় ম্যাগাজিন ইন্ডিয়া টুডে গৌতম আদানিকে ‘নিউজমেকার অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

কিন্তু বিভিন্ন সময়ে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মি. আদানি তার ধনসম্পদের পরিমাণ এবং প্রভাবকে খুব বড় কিছু বলে উল্লেখ করেন নি।

“এই র‍্যাংকিং এবং সংখ্যা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়,” ইন্ডিয়া টুডেকে তিনি একথা বলেন। বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তার অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এগুলোর সবই মিডিয়ার বাড়াবাড়ি।”

আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের কর্পোরেট অফিস
আহমেদাবাদে আদানি গ্রুপের কর্পোরেট অফিস।

“মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য সুযোগ ও সক্ষমতা কাজে লাগানো এবং দেশ গঠনের জন্য প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধিতে অবদান রাখা আমার জন্যে অনেক বেশি সন্তোষজনক এবং গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন তিনি।

গৌতম আদানির কোম্পানি হিনডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের যে জবাব দিয়েছে তা থেকে ধারণা করা যায় যে মি. আদানি চুপ করে বসে থাকবেন না এবং তিনি তার কোম্পানির ক্ষতি হতে দেবেন না।

ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে মি. আদানি শুক্রবার ভারতের জ্বালানি মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং তার কোম্পানিকে ঘিরে এই বিতর্কের কোনো প্রভাব যাতে শেয়ার বিক্রি করে ২৫০ কোটি ডলার তোলার পরিকল্পনার ওপর না পড়ে সেবিষয়েই তিনি জোর দিচ্ছেন।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দিতে বিশেষ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা আজ সোমবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। নতুন এ ব্যবস্থার নাম ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি।

এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার স্বার্থে এবং ইসলামিক আর্থিক ব্যবস্থাপনা আরও শক্তিশালী করতে ১৪ দিন মেয়াদি তারল্য–সুবিধা ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটি প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শরিয়াহ ব্যাংকগুলো সপ্তাহের প্রতিটি কার্যদিবসে নিয়মিতভাবে এ সুবিধা গ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবে।

এ নিয়ে একটি নীতিমালাও করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, তারল্য–সুবিধার মেয়াদ হবে ১৪ দিন। তিন মাস মেয়াদি আমানতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের যে মুনাফার হার, এ ক্ষেত্রেও একই মুনাফা দিতে হবে। কমপক্ষে এক কোটি টাকা তারল্যের জন্য আবেদন করা যাবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অকশন কমিটি তারল্য–সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে। আর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাব থেকে টাকা মুনাফাসহ ফেরত নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে নির্ধারিত সময়ে টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের লিয়েনে রাখা বন্ড থেকে তা সমন্বয় করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি তারল্য–সংকটে পড়ে কয়েকটি ইসলামি ব্যাংক টাকা ধার করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারস্থ হয়েছে। সে জন্যই নতুন এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

দেশের ৬১ ব্যাংকের মধ্যে এখন ১০টি ইসলামি ধারার ব্যাংক। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। ব্যাংকটির আমানত প্রায় দেড় লাখ কোটি টাকা। অন্য ব্যাংকগুলো হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউনিয়ন, সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী, আল-আরাফাহ্‌, এক্সিম, শাহজালাল, স্ট্যান্ডার্ড ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। প্রথম আলো

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: আন্তর্জাতিক বাজারে গত কয়েক মাসে গমের দাম কমলেও বাংলাদেশের বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। বরং গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের বাজারে আটা ও রুটির দাম বেড়েই চলেছে।

জুন মাসেও ঢাকার বাজারে এক কেজি আটা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৬০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, গত ২০ বছরে বাংলাদেশে গমের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও প্রভাব নেই দেশের বাজারে
বাংলাদেশের একজন গম আমদানিকারক কে এইচ এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার খোরশেদ আলম দাবি করছেন, ‘আমরা আগে যে দামে গম কিনেছি, এখন সেগুলো আসছে। নতুন দামের গমের এলসি আমি এখনো খুলি নাই, অনেকেই খোলে নাই। সেগুলো বাজারে এলে তখন হয়তো আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারবো।‘

বাংলাদেশে প্রতি বছর গমের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৭৫ লাখ টন। এর মধ্যে ১০ থেকে ১৫ লাখ টন দেশে উৎপাদিত হয়, বাকিটা আমদানি করতে হয়।

আমদানির বেশিরভাগটা রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে করা হতো। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম বাড়তে শুরু করে।

ফলে বাংলাদেশের আমদানিকারকরাও বেশি দাম দিয়ে বুলগেরিয়া, রোমানিয়া থেকে গম আমদানির চেষ্টা করেন।

তবে ডলারের বিপরীতে টাকার দর পড়ে যাওয়ার কারণে সেটিও গমের দাম বৃদ্ধিতে বাড়তি উপাদান যোগ করেছে।

এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে গমজাত খাদ্যপণ্য ও বেকারি আইটেমের দাম রাতারাতি বেড়ে যায়। খোলা আটার কেজিও ৩০ টাকা থেকে এখন ৬০ টাকায় উঠেছে।

খোরশেদ আলম বলেন, ’ডলারের দামও তো এখন আগের অবস্থায় নেই। আগে আমরা ৮৫ টাকা দরে ডলার কিনতাম, এখন সেটা ১০৫ টাকা হয়েছে। ফলে চাইলেও আগের দামে আর হয়তো ফিরে যাওয়া যাবে না। কিন্তু নতুন করে যেসব গমের এলসি হবে, সেগুলো দেশে আসতে শুরু করলে দেশের বাজারেও দাম কিছুটা অবশ্যই কমবে।‘

গমের দামের বৃদ্ধি ও হ্রাস
ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে গম ও ভোজ্যতেলের মতো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। কারণ বাংলাদেশের গমের চাহিদার বড় অংশ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে।

তবে অক্টোবরের প্রথম দিকে কৃষ্ণসাগর থেকে খাদ্যপণ্য রফতানির চুক্তি হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছিল।

পরবর্তী সময়ে ওই চুক্তি থেকে রাশিয়া সরে আসার ঘোষণা দেয়ার পর গমের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছিল। তবে কিছুদিন পরেই রাশিয়া কৃষ্ণসাগর থেকে খাদ্যপণ্য রফতানি করতে দেয়ার ঘোষণা দেয়ার পর আবার দাম কিছুটা কমে আসে।

সেইসাথে রাশিয়ায় গমের বাম্পার ফলন হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছে।

শুক্রবার শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে প্রতি টন গম লেনদেন হয়েছে ২৭৯.৬২ ডলার দরে। অক্টোবর মাসেও এই দর ছিল ৩৯৫ ডলার।

ব্যবসায়ীরা ধারণা করছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম বিশ্ববাজারে আসার পর গমের দাম আরো কমতে পারে।

বাংলাদেশে কবে কমবে দাম
আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলেও তার কোনো প্রভাব দেখা যায়নি বাংলাদেশের বাজারে।

আন্তর্জাতিক বাজারে দমের দাম বেড়ে যাওয়ার পর আটা ও গমজাত খাদ্যপণ্যের দাম বাড়িয়েছিল বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমলেও তাতে আটা, রুটি বা এ জাতীয় পণ্যের দাম কমবে কিনা, সেটি নিশ্চয়তা দিতে পারছে না ব্যবসায়ীরা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে প্রতি কেজি আটার তুলনায় এই বছরের নভেম্বরে ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সময় প্রতি কেজি আটার দাম ছিল ৩২ টাকা, যা এখন ৬০ টাকা পার হয়ে গেছে।

আটা বা ময়দা দিয়ে তৈরি যে রুটি বা পরোটা ছয় মাস আগেও বিক্রি হতো আট টাকা বা দশ টাকা দরে, সেটির দাম এখন দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেইসাথে পাউরুটি, বিস্কুট বা বেকারি আইটেমের কোনো কোনো ক্ষেত্রে দাম বেড়েছে। আবার কোনো কোনো পণ্যের দাম আগের মতো রাখা হলেও আকার কমিয়ে দেয়া হয়েছে।

বড় আমদানিকারকরা এ জন্য দায় চাপাচ্ছেন খুচরা ব্যবসায়ীদের ওপরে।

অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা আঙ্গুল তুলছেন গমের পাইকারির চড়া দামের ওপরে।

গম আমদানিকারক খোরশেদ আলম বলেন, ’আমরা তো গম এনে পাইকারি বিক্রি করি। তারপরে সেটা খুচরা বাজারে বিক্রি হয়। সেখান থেকে আবার আটা তৈরি হয়। এরপরে অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য তৈরি হয়। ফলে আমরা কম দামে বিক্রি করলেও তাতে বাজারে আটার দাম কমবে কিনা, সেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে,’ বলছিলেন তিনি।

তবে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাইলেই তাদের পক্ষে আটার দাম কমানো সম্ভব নয়। কারণ তারা এটি পাইকারি কিনে এনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন।

ঢাকার কাঠালবাগানের একজন মুদি দোকানী মনোয়ার হোসেন বলেন, ’আমরা যে দামে গম পাই, সেটা ভাঙ্গিয়ে অথবা আটা কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। গমের দাম বাড়লে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হয়, আর কমলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি। কিন্তু পাইকারিতে দাম না কমলে তো আমরা কিভাবে বিক্রি করবো?’

অথচ আন্তর্জাতিক বাজারে যখন কোনো পণ্যের দাম বাড়ে, বাংলাদেশের বাজারেও রাতারাতি দাম বেড়ে যায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে তার প্রভাব সহজে দেখা যায় না।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো অস্বাভাবিকভাবে মুনাফা করার চেষ্টা করে। ফলে তারা অনেক সময় কম দামে খাদ্যপণ্য কিনলেও বাজারে সেটা কম দামে বিক্রি করেন না। সরকারও এক্ষেত্রে যথাযথ নজরদারি করতে পারছে না।‘

অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, এর পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে।

তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এটা হয়তো স্থানীয় বাজারে যেসব পণ্য আছে, অর্থাৎ স্টকে যেটা আছে, সেটা হয়তো আগের দরে কেনা, বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে মেলে না।’

‘তবে বাংলাদেশে এটা একটা সাধারণ প্রবণতা, বিশ্ববাজারে বাইরে বাড়লে তারা সাথে সাথে বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু আমদানির ক্ষেত্রে কমলেও তারা অপেক্ষা করে কবে কম দামের পণ্যটা বাজারে আসবে। ফলে কম দামের সুফল পেতে হয়তো সময় লেগে যায়।’

’আমাদের দেশে অনেক বাণিজ্য নীতিমালা, নিয়মকানুন বা আইন থাকলেও অনেক সময় সেটার ঠিকমতো প্রতিফলন হয় না। গম বা চালের কথাই বলুন না কেন, কিছু ব্যবসায়ী এটা নিয়ন্ত্রণ করেন। নানা নামে প্রতিষ্ঠান থাকলেও এখানে অনেকটা একচেটিয়া ব্যবসা রয়েছে। ফলে বাজারটা প্রতিযোগিতামূলক নয়। তাই কেউ কম দামে কিনলেও সেটা আর কম দামে বাজারে আসে না। সরকারও এসব আইনের কড়াকড়ি তেমন করে না,‘ বলছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সেইসাথে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা আর এক্সচেঞ্জ রেটেও ওঠানামার কারণেও বিশ্ববাজারে কেনা পণ্যের দাম দেশীয় বাজারের প্রতিফলন হতে সময় লাগে বলে তিনি মনে করেন।

সূত্র : বিবিসি

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বেসরকারি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বেড়েছে। ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১ হাজার ২৯৭ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি), যা আগে ১ হাজার ২৫১ টাকা ছিল।

রোববার এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এলপি গ্যাসের নতুন এ দাম ঘোষণা করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দেন বিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১২ কেজির প্রতিটি সিলিন্ডারের দাম ৫১ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৫১ টাকা।

এর আগে অক্টোবর মাসে এলপি গ্যাসের ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩৫ টাকা কমিয়ে ১২০০ টাকা নির্ধারণ করে বিইআরসি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিইআরসি সচিব খলিলুর রহমান, সদস্য মোকবুল-ই ইলাহিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রোববার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এ দাম কার্যকর হবে। এর আগের মাসে ১২ কেজিতে ৫১ টাকা বেড়েছিল।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবেবিইআরসির চেয়ারম্যান মো. আবদুল জলিল বলেন, সরকারের ইচ্ছা অনুসারে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিইআরসি আইন সংশোধন করা হয়েছে। সরকার চাইলে আইন পরিবর্তন করতে পারে। কমিশন আইন অনুযায়ী চলবে।

গত বছরের ১২ এপ্রিল দেশে প্রথমবারের মতো এলপিজির দাম নির্ধারণ করে বিইআরসি। এরপর থেকে প্রতি মাসে দাম সমন্বয় করা হচ্ছে। যুগান্তর

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ যেভাবে ঋণ চেয়েছিল সেভাবেই পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেছেন, আমরা যেভাবে ঋণ চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবেই পেতে যাচ্ছি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই ঋণের বিষয়ে সব প্রক্রিয়া শেষ হবে।

আজ বুধবার আইএমএফের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।  অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা যে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি সেটা মোট ৭ কিস্তিতে পাওয়া যাবে।

সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার জন্য দেড় বিলিয়ন করে ৩ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে। বাকি দেড় বিলিয়ন চাওয়া হয়েছে আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল (ট্রাস্ট) থেকে।

এই ঋণের জন্য আইএমএফ বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। আইএমএফ যেসব সংস্কার কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো, করপোরেট সুশাসন আরও বলিষ্ঠ করা, বর্তমান অবকাঠামোর ওপর তদারকি আরও কঠোর করা ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ঋণদাতাদের অধিকার প্রয়োগের জন্য আরও বলিষ্ঠ সহযোগিতা ও ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিতের জন্য আইনি ব্যবস্থার যথোপযুক্ত সংস্কার।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী ইলন মাস্ক অনেক টানা-হেঁচড়ার পর শেষ পর্যন্ত ৪৪০০ কোটি ডলারে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি টুইটার কিনে নিলেন।

মালিকানা পাওয়ার পর মি মাস্ক টুইট করেন “দি বার্ড ইজ ফ্রি (পাখি এখন মুক্ত)।” টুইটারের প্রতীক একটি পাখি।

কোম্পানির মালিকানা হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই তিনি টুইটারের ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রধান নির্বাহী পরাগ আগরওয়াল এবং ঊর্ধ্বতন বেশ কজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন বলে খবর বেরিয়েছে।

ইলন মাস্ক নিজেই এখন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী পদটি নেবেন বলে মার্কিন গণমাধ্যমের বিভিন্ন খবরে বলা হচ্ছে।

মার্কিন মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, টুইটারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা নেড সেগাল এবং আইন ও নীতি বিষয়ক প্রধান বিজয়া গাডডেও বিদায় নিয়েছেন।

রয়টর্স বার্তা সংস্থা খবর দিয়েছে, মি. আগরওয়াল এবং আরও দুজন সিনিয়র কর্মকর্তাকে নিরাপত্তা রক্ষী দিয়ে সানফ্রানসিসকোতে টুইটারের সদর দপ্তরের অফিস ভবনের বাইরে বের করে দেয়া হয়।

ওদিকে, নভেম্বর মাস থেকে যিনি টুইটারের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন, সেই ব্রেট টেইলর তার লিংকডইন প্রোফাইল আপডেটে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তিনি আর টুইটারের ঐ পদে নেই।

টুইটার কেনার আগে মাসের পর মাস ধরে আইনি টানা-হেঁচড়া চলেছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে, ইলন মাস্ক অত্যন্ত প্রভাবশালী এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মকে কিভাবে চালাবেন।

মি. মাস্ক, যিনি “শতভাগ বাক স্বাধীনতার” সমর্থক বলে নিজেকে তুলে ধরেন, টুইটারের ব্যবস্থাপনা এবং মডারেশন বা মিতাচার নীতির সমালোচক ছিলেন।

ক্রয়ের শর্ত নিয়েও সাবেক মালিক পক্ষের সাথে ইলন মাস্কের অনেক বিরোধ হয়েছে। তার অভিযোগ ছিল টুইটারের ব্যবহারকারীর প্রকৃত সংখ্যা তাকে দেওয়া হয়নি।

তিনি এও বলেছেন অনেক যেসব ব্যবহারকারীকে টুইটার নিষিদ্ধ করেছে তাদেরকে তিনি ফিরিয়ে আনবেন।

ধারণা করা হচ্ছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যাকে ২০২১ সালে জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিল দাঙ্গার পর নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, তিনিও টুইটারে ফিরে আসতে পারেন। মি. মাস্ক মনে করেন মি. ট্রাম্পকে এভাবে নিষিদ্ধ করা “বোকামি” হয়েছে।

কিছু কিছু মিডিয়া রিপোর্টে বলা হচ্ছে, শুধু সিনিয়র নির্বাহীরাই নয়, টুইটার থেকে প্রচুর কর্মী ছাঁটাই হতে পারে। এমনও গুজব উঠেছে ৭৫ শতাংশ কর্মীরই চাকরি চলে যেতে পারে।

তবে টুইটার এবং ইলন মাস্কের আরেক কোম্পানি টেসলার একজন বড় মাপের শেয়ারহোল্ডার বিবিসিকে বলেছেন টুইটারে প্রচুর মেধাবী কর্মী রয়েছে যাদেরকে বের করে দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন না।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার (৪.৫ বিলিয়ন ডলার) ঋণ দেয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি দল ঢাকায় এসেছে। বুধবার থেকে আগামী ৯ই নভেম্বর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে তারা। আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর প্রধান রাহুল আনন্দ দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ ঋণ চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল আইএমএফের কাছে। চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফের বার্ষিক সভায় ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার এক ফাঁকে এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বাধীন দল আইএমএফের সঙ্গে এক দফা আলোচনাও করে।

আইএমএফ ২১শে অক্টোবর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, তাদের এবারের ঢাকায় আসা মূলত বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করা। সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে, কর্মকর্তা পর্যায়ে চুক্তির অগ্রগতির জন্য আলোচনা করা। আলোচনা হবে আইএমএফের বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ), বর্ধিত তহবিলসহায়তা (ইএফএফ) কর্মসূচি এবং নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই–সহায়তা তহবিল (আরএসটিএফ) কর্মসূচি থেকে এ ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে।

আরএসটিএফ ঋণের অধীনে সাশ্রয়ী ও দীর্ঘ মেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোকে অর্থায়ন করা হয়। আইএমএফের কাছে ঋণের জন্য চাওয়া চিঠিতে এই আরএসটিএফের কথাও উল্লেখ করেছিল বাংলাদেশ।

এক দশক আগে আইএমএফের ইসিএফ থেকে ৭ কিস্তিতে ১০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর এবারই সংস্থাটি থেকে ঋণ নেয়ার আলোচনা হবে।

আইএমএফের কাছে পাঠানো চিঠিতে ঋণ পাওয়ার পক্ষে বাংলাদেশ সার্বিক অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে।

সূত্র জানায়, আইএমএফের দল বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করবে। এরপর একে একে বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের আরও কিছু দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবে দলটি। আগামী ৮ বা ৯ই নভেম্বর দলটির শেষ বৈঠক হবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে।

বাংলাদেশের রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন, রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রমকে গতিশীল করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় কর আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি, আয়কর আইন ও শুল্ক আইন প্রণয়ন, ব্যাংক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও খেলাপি ঋণ কমানো, ভর্তুকি ও প্রণোদনা কমানো, রিজার্ভ গণনার পদ্ধতি ঠিক করাসহ নানা বিষয় থাকবে আইএমএফের আলোচনার মধ্যে।

জানা গেছে, ৪৫০ কোটি ডলারের মধ্যে লেনদেনের ভারসাম্য বাবদ ১৫০ কোটি ডলার ও বাজেট–সহায়তা বাবদ ১৫০ কোটি ডলার পাওয়া যেতে পারে। বাকি ১৫০ কোটি ডলার পাওয়া যেতে পারে আইএমএফের আরএসটিএফ থেকে। মানব জমিন

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail