সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বিকালে ঢাবির সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে গণঅধিকার পরিষদের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নূরসহ ছাত্র অধিকার পরিষদের ১৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বিকালে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রেজাউল হত্যার বিচার এবং বুয়েটের শিক্ষার্থীদের আটকের প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেয় নূরের দল। অন্যদিকে একই সময়ে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধনের ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
বিকাল চারটা থেকেই রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। একই সময় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে মহরা দিতে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। এরপর বিকাল সাড়ে চারটার সময় নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে একটি মিছিল রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে পৌঁছালে সেখানে তাদের পথ আটকান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা বাগবিতণ্ডায় জড়ান। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের একাংশ।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ডাসের সামনে থেকে মারধর করে তাদের টিএসসির মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে নিয়ে আসা হয়। সেখানে মারধর করার সময় ছাত্রলীগ কর্মীদের একাংশ আরেকাংশকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় আহত অবস্থায় নুরুল হক নূরকে রিকশায় করে দোয়েল চত্বর এলাকা দিয়ে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
হামলায় আহত ১৩ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা হলেন- গণঅধিকার পরিষদ (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক নূর, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আব্দুজ জাহের, সদস্য সাদ শিকদার, যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাব্বির হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তুহিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্র অধিকারের সহ-সভাপতি মেহেদি, কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজের সাংগঠনিক সম্পাদক আকাশ, ঢাকা কলেজের সহ-সভাপতি রাকিব, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সভাপতি কাউসার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল ও মোহাম্মদপুর থানা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব রাজিব প্রমুখ।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, আহতদের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গণঅধিকার পরিষদের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে গেলে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরুর করে। এরপর ঢাবির ডাসের সামনে থেকে মারধর শুরু করে। এ সময় তাদের সঙ্গে আরও ছাত্রলীগ কর্মীরা অংশগ্রহণ করে। তারা আমাদের মারতে মারতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেট পর্যন্ত নিয়ে আসে। এতে আমাদের প্রায় ২০-২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমি গণমাধ্যম মারফত জানতে পেরেছি সাধারণ শিক্ষাথীরা ছাত্র অধিকার পরিষদের বহিরাগত সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছে। এই জায়গায় ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’ যুগান্তর