বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
চলতি দশকে বিশ্বের বুকে সমরাঙ্গন দাপিয়ে বেড়াচ্ছে যেসব যুদ্ধাস্ত্র তার মধ্যে অন্যতম তুরস্কের তৈরি বাইরাক্তার আকিনচি ড্রোন। ২০২১ সাল থেকে তুর্কি সামরিক বাহিনীর বহরে যুক্ত হয়েছে বাইকার মাকিনা কোম্পানির তৈরি আকিনচি। এ ড্রোনে ভর করেই নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধে আর্মেনিয়াকে নাকানি চুবানি খাইয়েছে আজারবাইজান। এমনকি সিরিয়ায় কুর্দি বিদ্রোহীদের ওপর হামলা থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনায়ও আকিনচি ড্রোনের সাফল্য নজর কেড়েছে সমরবিদদের।
তবে শুধু যুদ্ধ নয় বরং শান্তিতেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে অদ্বিতীয় আকিনচি। সর্বশেষ প্রয়াত ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারের রহস্যজনক দুর্ঘটনার পর ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে আকিনচি। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অন্ধকার আর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায়ও শুধু তাপমাত্রার পরিবর্তন লক্ষ্য করেই শনাক্ত করে হেলিকপ্টারের ধ্বংসাবশেষ।
তুরস্কের তৈরি আকিনচি ড্রোন সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ফুট উচ্চতায় অন্তত ৪০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় উড়তে পারে। তবে কোনো অনুসন্ধানী অভিযানে খুব ধীর গতিতেও এটি উড়তে সক্ষম। কোনো প্রকার বিরতি ছাড়াই এ ড্রোন টানা ২৪ ঘণ্টা উড়ে বেড়াতে পারে আকাশে। শুধু তাই নয়, অধিক উচ্চতায় উড়ার ক্ষমতা, নাইট ভিশন ও তাপ শনাক্তকরণ প্রযুক্তি আকিনচিকে দুর্গম ভূখণ্ড ও দুর্যোগপূর্ণ আবাহওয়ায়ও কঠিন অভিযান পরিচালনার সক্ষমতা দিয়েছে।
আকিনচি ড্রোনটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমানের মতোই বহন করতে পারে ভয়ংকর সব ক্ষেপণাস্ত্র। এমনকি গ্রাউন্ড সিস্টেমের সাহায্য ছাড়াই সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেক অব ও ল্যান্ডিংসহ পার্কিং করতে পারে আকিনচি। রয়েছে অটোপাইলট ব্যবস্থা। আকিনচির সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রযুক্তি হলো জিপিএস ব্যবস্থা অকার্যকর হলেও নিজস্ব সেন্সর ফিউশনের কারণে নিজ থেকেই খুঁজে নিতে পারে লক্ষ্যবস্তুকে।
এরই মধ্যে আকিনচির দুর্ধর্ষ এসব সুবিধার কারণে তুরস্ক ছাড়াও এটি ব্যবহার করছে পাকিস্তান, লিবিয়া, ইথিউপিয়া ও আজারবাইজানের সামরিক বাহিনী। ড্রোনটি কেনার অপেক্ষায় রয়েছে ইউরোপের অনেক দেশও। এ ড্রোন ব্যবহার করে আকাশ থেকে আকাশ কিংবা আকাশ থেকে ভূমি যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা যায় নিখুঁত ও সঠিক সময়ে।