শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪
স্কটল্যান্ডের প্রথম মুসলিম নেতা নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হামজা ইউসুফ। ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। ফার্স্ট মিনিস্টার নির্বাচিত হওয়ার পর স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি বা এসএনপি-কে ঐক্যবদ্ধ করার কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে তার সামনে।
গাল্ফ নিউজ জানিয়েছে, স্কটল্যান্ডের আধা-স্বায়ত্তশাসিত সরকারের ফার্স্ট মিনিস্টার হওয়ার দৌড়ে বিজয় নিশ্চিতের মধ্য দিয়ে পশ্চিম ইউরোপের কোনো দেশের প্রথম মুসলিম শাসক হতে চলেছেন ইউসুফ। তিনি সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার স্টার্জনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তার জয় অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিল। এসএনপি দলে তার জয় প্রমাণ করে যে, স্বাধীনতাপন্থী দলটি অদূর ভবিষ্যতে তার প্রগতিশীল নীতি থেকে সরে আসছে না।
যদিও ইউসুফ স্বাধীনতা আদায়ে স্টার্জেনের কৌশলে বিশ্বাস করেন না। তিনি বলেন, এভাবে অনন্তকাল ধরে স্বাধীনতা নিয়ে শুধু বিতর্ক করে গেলে কোনো কিছু অর্জন হবে না। ফার্স্ট মিনিস্টার পদে তিনি জয় পেলেও প্রচারণার সময় তার দলের মধ্যে বড় ধরণের বিভেদ দেখা গেছে। স্বাধীনতা এবং সামাজিক ইস্যুগুলোতে প্রার্থীদের অবস্থানে ছিল ব্যাপক পার্থক্য। ফলে জয়ের পর এ বিষয়টির ওপরে জোর দিয়েছেন ইউসুফ। এডিনবার্গে তিনি বলেন, আমরা হচ্ছি সেই প্রজন্ম, যারা স্কটল্যান্ডকে স্বাধীন করবে।
গ্লাসগোতে জন্মগ্রহণকারী ৩৭ বছর বয়সী ইউসুফ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিতে ডিগ্রি নিয়েছেন। স্নাতক হওয়ার পর তিনি ২০১১ সালে নিজে একজন স্কটিশ এমপি’র সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি নিজেই এমপি নির্বাচিত হন। তার বাবা পাকিস্তানে জন্মেছিলেন এবং ১৯৬০ এর দশকে তিনি স্কটল্যান্ডে যান। আর তার মা কেনিয়াতে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইউসুফকে ২০১২ সালে প্রথম একজন জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সেই সময়ে স্কটিশ সরকারে নিযুক্ত হওয়া সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি এবং প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু ছিলেন তিনি। তিনি ২০১৮ সালে বিচারমন্ত্রী হিসাবে মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন এবং ২০২১ সালের মে মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হন। ইউসুফ বলেন, স্বাধীন স্কটল্যান্ড রাজতন্ত্র থেকে বেড়িয়ে আসবে। পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের উচিৎ রাজতন্ত্র থেকে বেড়িয়ে এসে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাচিত করা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কারণে চাপের মুখে পড়েছিলেন ইউসুফ। অডিট স্কটল্যান্ড গত মাসে জানিয়েছে, স্কটল্যান্ডের স্বাস্থ্যসেবা নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ খাত নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার বিষয়ে স্কটিশ সরকারের উচিৎ আরও বেশি স্বচ্ছ হওয়া। সংস্থাটি বলছে, স্বাস্থ্যখাতের অবস্থা এত খারাপ হয়েছে যে রোগীদের এখন চিকিৎসা পেতে, এমনকি সামান্য পরীক্ষার জন্যও বহু সময় ধরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।