শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে সংঘর্ষে কৃষক দল কর্মী নিহত, অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধ

লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে মো. সজীব নামের কৃষক দলের এক কর্মী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানাসহ উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল ও রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

পুলিশ, বিএনপি ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বিকেল চারটার দিকে শহরের গোডাউন রোড এলাকার বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ওরফে এ্যানীর বাসভবন থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। সাড়ে চারটার দিকে রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতালের কাছে পদযাত্রাটি পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রা সামনের দিকে এগিয়ে যায়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় জেলা শহরের ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা, রামগতি সড়কের আধুনিক হাসপাতাল, মটকা মসজিদ এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মৃত অবস্থায় এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। শরীরে বেশ কিছু কোপানোর জখম আছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়। বর্তমানে তাঁর লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দেয়। নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলায় অংশ নেয়। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মো. সজীব নামের কৃষক দলের একজন কর্মীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পুলিশের ছররা গুলিতে তাঁদের ৩০ থেকে ৪০ নেতা-কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে তিনি দাবি করেন।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক বলেন, ‘বিএনপির মিছিল থেকে আমাদের কর্মসূচিতে হামলা করে। আমাদের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে আহত করে বিএনপির লোকজন। বিএনপির দলীয় কোন্দলের কারণে তাঁদের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।’

অন্যদিকে পুলিশ দাবি করেছে, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলায় পুলিশের ২০ থেকে ২৫ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের জেলা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোসলেহ উদ্দিন বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের গোডাউন রোড পর্যন্ত পদযাত্রা করার কথা ছিল। পদযাত্রা নিয়ে সরাসরি রামগতি সড়কে যাওয়ার অনুমতি ছিল না তাঁদের। তাঁরা পদযাত্রা নিয়ে রামগতি সড়কে যেতে চাইলে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় তাঁরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। এতে তিনিসহ ২০ থেকে ২৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। বিপরীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে একজন নিহত হয়েছেন বলে শুনেছেন। তবে এখনো নিশ্চিত নয় পুলিশ। প্রথম আলো

আরো পড়ুন ...