Home প্রচ্ছদ
Category:

প্রচ্ছদ

ঢাকা: মিরপুরে ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো টাইগাররা। তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টাইগারদের দেয়া ১৫৯ রানের টার্গেট তাড়ায় ব্যাটিংয়ে নেমে ইংল্যান্ডের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করেন ডেভিড মালান। ৪৭ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করেন তিনি। জস বাটলারের সংগ্রহ ৪০ রান। বেন ডাকেট আউট হন ১১ রানে। ক্রিস ওকস ১৩* রান করেন। বাকিদের কেউ ছুঁতে পারেনি দুই অঙ্কের কোঠা।
৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন টাইগার পেসার তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট পান তানভীর ইসলাম, সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।

মালান-বাটলারের লড়াই

প্রথম ওভারেই ফিল সল্টকে হারানোর ধাক্কা সামলে উঠছে ইংল্যান্ড। ৭.২ ওভার শেষে ডেভিড মালান এবং জস বাটলার ৫৫ রানের পার্টনারশিপ নিয়ে লড়ছেন।

প্রথম আঘাত অভিষিক্ত তানভীরের

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় ম্যাচে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছেন তানভীর ইসলাম। আর অভিষেক ম্যাচে নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট পেলেন বাঁ হাতি এই স্পিনার। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে শূন্য হাতে ফেরালেন ফিল সল্টকে।

5 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: রাজধানীর ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে সিদ্দিক বাজার এলাকায় এক ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক লোক। আর এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে আরও হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান ও আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার আগে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের সদরদপ্তরের ডিউটি অফিসার খালেদা ইয়াসমিন জানান, ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের বিপরীতে সিদ্দিক বাজার এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে ৭টি ইউনিট কাজ করছে। ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়।

শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। যে ভবনে বিস্ফোরন হয়েছে সেটি ৫ তলা ভবন। নিচতলায় সেনেটারী দোকান এবং বাকি ৪টি ফ্লোর ব্র্যাক ব্যাংকের অফিস। মানব জমিন

 

2 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: নাটকীয়তার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে চরম উত্তেজনা। তার বক্তব্য এবং সংবাদ সম্মেলন সম্প্রচারে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে মিডিয়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা পাকিস্তান ইলেকট্রনিক মিডিয়া রেগুলেটরি অথরিটি (পেমরা) নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ইমরান খানের বক্তব্য প্রচার করার প্রায় দু’ঘন্টার মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এআরওয়াই নিউজের লাইসেন্স সাসপেন্ড করেছে। সোমবার তার বিরুদ্ধে জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করে জেলা ও দায়রা জজ কোর্ট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও নিউজ ও ডন।

তোশাখানা মামলায় পর পর তিনবার ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য তাকে আদালতে উপস্থিত হতে নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি একবারও উপস্থিত হননি। এ জন্য তার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। রোববার ইসলামাবাদ ও লাহোর পুলিশ জামান পার্কে অবস্থিত ইমরান খানের বাড়ি ঘেরাও করে ফেলে তাকে গ্রেপ্তার করতে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ পার্টির বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর বাধায় পুলিশ পিছু হটে। এক পর্যায়ে একজন এসপি ওই বাসার ভিতরে প্রবেশ করে ফিরে আসেন।

তিনি জানান, ইমরান খানকে তার রুমে পাওয়া যায়নি। অথচ তার পরপরই ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়ার বিরুদ্ধে তিক্ত বাক্য বর্ষণ করে ভাষণ দেন। এ নিয়ে পাকিস্তানের হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। দিনের শেষে রিপোর্টে বলা হয়, ইমরান খান ওই ভাষণে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ঘৃণা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এ জন্য তার ভাষণ ও সংবাদ সম্মেলন সম্প্রচার করা যাবে না। ওই ভাষণে ইমরান খান বলেছেন, গত বছর এপ্রিলে তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাতের নেপথ্যে ছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া। এ অবস্থায় পেমরা তার নোটিফিকেশনে বলেছে, ইমরান খান ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আইন শৃংখলা বিশৃংখল করার চেষ্টা করছেন। শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। ইমরান খান প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বার টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর বিরুদ্ধে ইমরানের বিবৃতি প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিল পেমরা। তারা এআরওয়াই নিউজের লাইসেন্স সাসপেন্ড করেছে। বলেছে, এই সংবাদ ভিত্তিক চ্যানেলটি ইমরান খানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। তারা নির্দেশ অমান্য করেছে। এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এআরওয়াই নিউজের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, রাত আটটার পর পেমরার বিবৃতি পেয়েছেন তারা। ততক্ষণে রাত ৯টার বুলেটিনে চলে গেছে ইমরান খানের ভাষণের ক্লিপ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা তা সত্ত্বেও শুধু আমাদের চ্যানেলের লাইসেন্স সাসপেন্ড করেছে। পেমরার এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান।

 

ওদিকে জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত দাবি করে সোমবার ইসলামাবাদের জেলা ও দায়রা জজ কোর্টে আবেদন করেন ইমরান খান। কিন্তু আদালতের অতিরিক্ত সেশন জজ জাফর ইকবাল বলেছেন, এ মামলার শুনানির পর তিনি আগের দিনের রায়ই বহাল রাখছেন। অর্থাৎ ইমরান খানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকবে। সোমবারের শুনানিতে ইমরান খানের আইনজীবী আলি বুখারি, কায়সার ইমাম এবং গহর আলি খান আদালতে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। বুখারি বলেন, তার মক্কেল সব সময় আদালতের নির্দেশ মেনে চলেন। এ সময় কায়সার ইমাম বলেন, ইমরান খান নিজে উপস্থিত হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। এ সময় বিচারক বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিতের জন্য ইসলামাবাদ হাইকোর্টে যেতে পারেন পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ প্রধান ইমরান খান।

জবাবে ইমাম বলেন, তারা চান যে সেশন কোর্ট গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করুক। আদালতকে এ সময় আইনজীবী বুখারি জানান, লাহোরের জামান পার্ক এলাকার বাসায় অবস্থান করছেন পিটিআই প্রধান। আদালতে যাওয়ার উপায় জানতে চাইছেন তিনি। কায়সার ইমাম বলেন, নির্বাচনী আইন ২০১৭ এর অধীনে পিটিআই প্রধানের বিরুদ্ধে একটি ‘প্রাইভেট অভিযোগ’ নিবন্ধিত হয়েছে। তিনি যুক্তি দেখান, প্রাইভেট অভিযোগের ওপর সাধারণত কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় না। এ জন্য তারা আদালতকে ওয়ারেন্ট স্থগিত করার অনুরোধ করেন। জবাবে বিচারক বলেন, পিটিআই প্রধানের আইনজীবী তাদেরকে জানিয়েছেন, তাদের মক্কেল আদালতে উপস্থিত হবেন না। ফলে বিচারক আগের রায় বহাল রাখেন।
তোশাখানা মামলায় আদালতে অনুপস্থিতির কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে ২৮শে মার্চ জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন অতিরিক্ত সেশন জজ জাফর ইকবাল। এই আদেশ অনুযায়ী রোববার একজন এসপির নেতৃত্বে ইসলামাবাদ পুলিশের একটি টিম লাহোরের জামান পার্কে যায় পরোয়ানা বাস্তবায়ন করতে। কিন্তু তারা তাতে ব্যর্থ হন।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে’ যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিলেন ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। এখন থেকে দেশের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতা এই তিনজনের সমন্বয়ে গঠিত কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে হবে।

সুপ্রিমকোর্টের এই পদক্ষেপকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে মনে করছেন অনেকেই। খবর এনডিটিভির।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্ট এ প্রসঙ্গে রায় দিতে গিয়ে জানিয়েছেন, সারা দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিন সদস্যের কমিটি নতুন নির্বাচন কমিশনারদের নাম প্রস্তাব করবে। তার ভিত্তিতেই কমিশনারদের নিযুক্ত করবেন রাষ্ট্রপতি।

সুপ্রিমকোর্টের ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা প্রয়োজন। সেই স্বচ্ছতার স্বার্থেই এই পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন শীর্ষ আদালত।

বর্তমান ব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে নির্বাচন কমিশনারদের নিযুক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। তাদের কার্যকালের মেয়াদ হয় ৬ বছর। সচরাচর দেশের সাবেক আমলাদের এই পদে বেছে নেওয়া হয়। তবে এই মনোনয়ন নিয়ে বারবারই প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস কিংবা বিজেপি, বিভিন্ন আমলেই বিরোধী দলগুলোর দাবি— সরকারের ঘনিষ্ঠ আমলাদের নির্বাচন কমিশনার করা হচ্ছে। যুগান্তর

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

শামুস দ্বীন। যখন তার বয়স ২০

বিবিসি বাংলা:: “আমি যখন কোন নিখোঁজ পরিবারকে খুঁজে পাই তখন আমি খুব আবেগপ্রবণ হয়ে যাই। এটা আমাকে কিছু একটা পাওয়ার অনুভূতি দেয়,” বিবিসিকে বলছিলেন শামসু দ্বীন।

গত প্রায় ২৫ বছর ধরে ত্রিনিদাদ ও টোবেগোর একজন ভূগোল শিক্ষক ক্যারিবীয় অঞ্চলের ৩০০টিরও বেশি পরিবারকে ভারতে দীর্ঘদিন ধরে তাদের হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে পেতে সহায়তা করছেন৷

তার সাফল্যের গল্পের মধ্যে রয়েছেন দু’জন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং তার নিজের পরিবারের সদস্যরা।

“এটা অনেকটা বার বার করে প্রেমে পড়ার মতো,” বলছিলেন তিনি, যখন আপনি জানতে পারলেন যে আপনার পরিবারের এমন সব সদস্য রয়েছে যাদের সম্পর্কে আপনি কিছুই জানতেন না তখন “তাৎক্ষণিকভাবে আপনার একটি নতুন সম্পর্ক তৈরি হয়,” বলছিলেন তিনি।

‘নতুন দাসপ্রথা’র শিকার হয়ে দেশত্যাগী যারা

ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় ১০ লক্ষেরও বেশি লোককে ভারতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের সময় ১০ লক্ষেরও বেশি লোককে ভারতের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়
ভারতে ব্রিটিশ শাসন, যার আরেক নাম ছিল ব্রিটিশ রাজ, সে সময় দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়েছিল। কিন্তু তখন শ্রমিকের ঘাটতি দেখা দিলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যজুড়ে ভারতীয় চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের “সস্তা শ্রম” হিসাবে ব্যবহারের প্রচলন শুরু হয়।

আঠারোশ আটত্রিশ থেকে ১৯১৭ সালের মধ্যে আখের খামারে কাজ করার জন্য অনেক ভারতীয়কে ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ আফ্রিকা, মরিশাস এবং ফিজিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়াটির প্রভাব এতটাই সুদূরপ্রসারী ছিল যে এর প্রভাব এখনও বিশ্বব্যাপী দেখা যায়। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বিশাল এক সম্প্রদায় এখনও এসব দেশে বসবাস করছেন।

যদিও এসব শ্রমিকের বেশিরভাগই স্বেচ্ছায় ঐ দেশগুলোতে গিয়েছিলেন, কিন্তু সম্ভবত তারা কোন্ পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছেন, সে সম্পর্কে তারা পুরোপুরিভাবে সচেতন ছিলেন না। তারা নিরক্ষর ছিলেন বলে চুক্তির শর্ত তারা বুঝতে পারেননি, এবং চুক্তিপত্রে তারা শুধু টিপসই দিয়েছিলেন। ফলে অনেক শ্রমিককে জোর করে অন্য উপনিবেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

এমনকি অনেকে জানতেনও না যে কোন্ দেশে তারা কাজ করতে যাচ্ছেন এবং কিছু ইতিহাসবিদ চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক ব্যবহারের ব্যবস্থাকে “নতুন দাস ব্যবসা” হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

এখন ক্যারিবীয় অঞ্চলের এসব চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের নাতি-নাতনিরা ভারতের পথে ফিরতে শুরু করেছেন। এক শতাব্দী আগে তাদের পূর্ব-পুরুষরা যে পথ ধরে এসব উপনিবেশগুলিতে গিয়েছিলেন, এখন তাদেরই উত্তরপুরুষ ঠিক বিপরীত পথটি ধরে ভারতে ফিরছেন। এবং শামসু দ্বীনের সহায়তায় তাদের আত্মীয়-স্বজনকে খুঁজে বের করছেন, যাদের অস্তিত্ব সম্পর্কেই তাদের ধারণা ছিল না।

বালকসুলভ কৌতূহল থেকে শুরু পরিবারের সন্ধান

Indian workers in a sugarcane field
ত্রিনিদিাদের একটি আখের খামারে কাজ ভারত থেকে যাওয়া কৃষকরা

শামসু দ্বীনের পরিবারের অন্য সদস্যদের খুঁজে বের করার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল তার নিজের পারিবারের বংশ-লতিকা সম্পর্কে কৌতূহল থেকে। স্কুলে পড়ার সময় তিনি এরকম একটি তালিকা দেখেছিলেন।

“আমাদের বাড়িটি যে জমির ওপর তৈরি করা হয়েছিল সেটি কিনেছিলেন মুনরাদিন (মনিরুদ্দিন)। তিনি ছিলেন আমার দাদার দাদা। কিন্তু পরিবারের কেউ তার সম্পর্কে আমাদের আর কিছু জানাতে পারেননি,” ব্যাখ্যা করলেন শামসু দ্বীন।

স্নাতক ডিগ্রি নেয়ার পর শামসু দ্বীন চাকরি নিয়ে ক্যানাডায় চলে যান। ১৯৭২ সালে প্রথমবারের মতো ত্রিনিদাদে ফিরে আসার পর তিনি রেড হাউস নামে এক সরকারি অফিসে যান যেটি পরবর্তীকালে আইন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পরিণত হয়। সে সময় তার সাথে ছিলেন তার স্ত্রী, শ্যালক এবং তার ভাই। ঐ অফিসের সেলারে রাখা নথিপত্রের স্তূপের মধ্যে তারা মুনরাদিনের নাম খুঁজতে থাকেন। এভাবে প্রায় চার ঘণ্টা অনুসন্ধানের পর প্রথমবারের মতো তারা আশার আলো দেখতে পান।

“আমার জন্য সেটা ছিল এক ইউরেকা মুহূর্ত। পোকায় কাটা একটি দলিলের শেষ পৃষ্ঠায় আমরা খুঁজে পেলাম মুনরাদিনের নাম,” হাসিমুখে সে দিনের কথা বলছিলেন তিনি।

“১৮৫৮ সালের ৫ই জানুয়ারি তিনি কলকাতা ত্যাগ করেন এবং ১০ই এপ্রিল এখানে আসেন।”

এরপর মুনরাদিনের জীবনযাত্রার একটি ছবি তৈরির জন্য শামসু দ্বীন ত্রিনিদাদে পাওয়া বিভিন্ন নথির সাহায্য নেন।

“আমরা জানতে পারি তিনি শিক্ষিত ছিলেন এবং ইংরেজিতে কথা বলতে পারতেন। মুনরাদিন আখের বাগানে কাজ করতেন। পরে তিনি অনুবাদের কাজ শুরু করেন। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মুনরাদিন শিক্ষকতা শুরু করেন এবং শেষে দুটি দোকানের মালিক হন। তার ছিল দুই স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তান। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন পরে সেখানে তার সন্তানরাও থাকতেন। কিন্তু এক সময় আগুন লেগে বাড়িটি ধ্বংস হয়ে যায়।”

যুগ যুগ পর হারানো স্বজনদের সাথে দেখা

ভোনজি ছিলেন শামদু দ্বীনের বংশের শেষ পূর্বপুরুষ যিনি ভারত থেকে যাত্রা করেছিলেন
ভোনজি ছিলেন শামদু দ্বীনের বংশের শেষ পূর্বপুরুষ যিনি ভারত থেকে যাত্রা করেছিলেন

মুনরাদিনের মতোই এরকম আরও অনেক চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন যাপন করেছেন এবং মারা গেছেন দূরদেশে। মুনরাদিনকে নিয়ে গবেষণার সময় শামসু দ্বীন তার পরিবারের তিনটি শাখা খুঁজে পান।

“আমার বাবার দাদীর বাবা মোহাম্মদ মুকিত ১৮৫২ সালে কলকাতা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেন।”

মোহাম্মদ মুকিত ছিলেন পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি, যাকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তখন মুনরাদিনের বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। শুধুমাত্র ১৮৫৯ সালের পর থেকে সরকারি নথিতে শ্রমিকরা যেসব গ্রাম থেকে থেকে এসেছিলেন সেসব গ্রামের নাম উল্লেখ আছে। তার মানে মুনরাদিন কোন গ্রাম বা শহর থেকে এসেছিলেন তা কেউ জানে না।

শামসু দ্বীন যখন তার মায়ের বংশ সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন, তখন তিনি দেখতে পান যে তার পরিবারের সদস্যরা ১৮৬৫, ১৮৬৮, ১৮৭০ এবং ১৮৭৫ সালের কিছুটা পরে এসেছেন, যার অর্থ, যে গ্রামগুলো থেকে তারা এসেছিলেন তিনি সেগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পেরেছিলেন।

“আমার নানার নানী জোসেমিয়া ১৮৭০ সালের ২৫শে আগস্ট থেকে ২৬শে নভেম্বর কোন এক সময়ে উইল্টশায়ার জাহাজে চেপে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং আমি উত্তর প্রদেশে তার ভাই জুমান জোলার বংশধরদের খুঁজে পেয়েছি।”

যদিও শামসু দ্বীন ভারতীয় জমিজমার নথিপত্র থেকে জোসেমিয়াকে খুঁজে পাননি, কিন্তু একটি ডেথ-রেজিস্টার দেখে এবং সেখান থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে তিনি তার পরিবারের হারিয়ে যাওয়া শাখার অংশবিশেষ খুঁজে পেতে সক্ষম হন।

তারপর তার পরিবারের শেষ সদস্য, যিনি ১৮৭২ সালে ভারত থেকে চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক হিসাবে ক্যারিবিয়ানে এসেছিলেন, সেই ভোনজি’র উত্তরপুরুষদের সাথে দেখা করেছিলেন। ভোনজি ত্রিনিদাদে এসেছিলেন তার বাবা-মা এবং তিন ভাইবোনের সাথে, মাত্র সাত বছর বয়সে। । এরপর শামসু দ্বীন ক্যারিবিয়ান এবং ভারত উভয় দেশেই ভোনজি’র আত্মীয়দের সাথে দেখা করেন।

“আমার কাছে ভোনজি’র একটি মাত্র ছবি আছে,তখন আমার বয়স তিন বছর। তিনি নাতিপুতি দেখে যেতে পেরেছিলেন। ধারণা করা হতো, মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল ১১৫ বছর, কিন্তু নথিপত্র ঘেঁটে আমি দেখেছি তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।”

শখ যখন পরিণত হলো কেরিয়ারে

শামসু দ্বীন বলছেন, প্রতিটি পরিবারের সম্পর্কে জানতে গেলে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে হয়
শামসু দ্বীন বলছেন, প্রতিটি পরিবারের সম্পর্কে জানতে গেলে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়

শামসু দ্বীন কর্মজীবনে ছিলেন ভূগোলের শিক্ষক। কিন্তু তার এই শখ মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে শুরু করে। তাই ভারতীয় হাইকমিশন থেকে ১০টি হিন্দু এবং ১০টি মুসলমান পরিবারের স্বজনদের খুঁজে বের করার জন্য তিনি একটি বৃত্তি পান।

এর পর চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের অন্তত ৩০০টি পরিবারকে তিনি সাহায্য করতে গিয়েছিলেন। পরে এটা তার পেশা হয়ে দাঁড়ায়। বংশ-বৃত্তান্ত সম্পর্কে তিনি একজন বিশেষজ্ঞে পরিণত হন, এবং ত্রিনিদাদ এবং ভারত – দুটি দেশের গবেষণা দলকে সহায়তার জন্য তিনি অর্থ পান।

ত্রিনিদাদ ও টোবেগোর দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বাসদেও পাণ্ডে এবং কমলা প্রসাদ বিশ্বেশ্বরের পারিবারিক পুনর্মিলনে তিনি সরাসরিভাবে সাহায্য করেছেন।

যদিও ডিজিটাল মানচিত্র এবং ঐতিহাসিক রেকর্ডগুলিতে ভাল অ্যাক্সেসের সুবাদে এধরনের অনুসন্ধান চালানো এখন অনেকটাই সহজ, কিন্তু শামসু দ্বীন বলছেন, এখনও বহু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এবং তার কাজে সাফল্যে হার শতকরা ৮০ ভাগ বলে তিনি মনে করেন।

“তবে সব মানুষের বংশ পরিচয় আমি বের করতে পারিনি। কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা গেছে আমাকে যেসব নথি দেয়া হয়েছে তার তথ্যে ভুল ছিল,” ব্যাখ্যা করছেন তিনি।

নতুন পথ চলা শুরু জীবনের

ত্রিনিদাদের বালি এবং লীলা মহারাজ (গলায় মালা)। তাদের দাদা পল্টু প্রসাদ ছিলেন একজন চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক
ত্রিনিদাদের বালি এবং লীলা মহারাজ (গলায় মালা)। তাদের দাদা পল্টু প্রসাদ ছিলেন একজন চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক

দুর্ভাগ্যবশত, কিছু চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক ভারত থেকে ত্রিনিদাদে যাওয়ার পথেই মারা যান। এবং যারা শেষ পর্যন্ত হাজির হতে পেরেছিলেন তারা প্রায়শই কঠোর এবং চ্যালেঞ্জিং জীবনের মুখোমুখি হন। তবে তাদের মধ্যে কিছু সাফল্যের গল্পও রয়েছে।

শামসু দ্বীন ব্যাখ্যা করছেন, চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও অনেক শ্রমিক স্বেচ্ছায় ত্রিনিদাদে রয়ে গিয়েছিলেন এবং মুক্ত মানুষ হিসেবে বসবাস করেছিলেন।

ত্রিনিদাদের এক দম্পতি বালি এবং লীলা মহারাজকে সাহায্য করার কথাও তিনি মনে করতে পারেন। তাদের পারিবারিক বংশলতিকা অনুসন্ধান করে তিনি খুঁজে পান প্রাক্তন চুক্তিবদ্ধ শ্রমিক পল্টু প্রসাদকে, যিনি ভারতে তার নিজ গ্রামে ফিরে গিয়ে জমি কিনেছিলেন এবং সেই জমির ওপর স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শামসু দ্বীন এমনকি ঐ দম্পতিকে স্কুলটি ঘুরে দেখারও ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন।

শামসু দ্বীন বলেন, এধরনের ঘটনা এবং পারিবারিক পুনর্মিলন থেকে তিনি অনুপ্রাণিত হন, যেমনটা ঘটেছিল ডেভিড লাখান এবং তার পরিবারের ক্ষেত্রে।

ত্রিনিদাদের নাগরিক ৬৫-বছর বয়সী এই ব্যক্তি বলছেন, “আমার দাদা কোথা থেকে এসেছিলেন স্কুল জীবন থেকেই তা জানতে আমি খুবই আগ্রহী ছিলাম।”

আঠারোশ অষ্টাশি সালে মাত্র ২২-বছর বয়সে তার দাদা ত্রিনিদাদে গিয়েছিলেন। একটি নথিতে তার নাম শুধু লেখা ছিল – লাখান। কিন্তু এত দূরদেশে আসার সিদ্ধান্তের পেছনে আমার দাদার মনোবল এবং দৃঢ়তা সম্পর্কে জানতে চাইতাম,” বিবিসিকে বলছিলেন তিনি।

শামসু দ্বীন ত্রিনিদাদের জাতীয় আর্কাইভের কিছু ইমিগ্রেশন কাগজপত্র খুঁজে পান যেখানে লাখানের ভাই, বাবা, তার জাত এবং তার গ্রামের নাম লেখা ছিল। ভারতে তার পরিচিত লোক ব্যবহার করে শামসু দ্বীন ডেভিড লাখানের দীর্ঘদিনের হারিয়ে যাওয়া আত্মীয়দের খুঁজে করতে সফল হন। ২০২০ সালে তিনি ভারতে একটি পারিবারিক পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করেন।

ঐ পরিবারের জন্য ১৩২ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এটি ছিল এধরনের প্রথম কোন ঘটনা।

ভারতে শামসু দ্বীনের নিজের পরিবার। এরকম বহু বিচ্ছিন্ন পরিবারের মধ্যে তিনি মিলন ঘটিয়েছেন
ভারতে শামসু দ্বীনের নিজের পরিবার। এরকম বহু বিচ্ছিন্ন পরিবারের মধ্যে তিনি মিলন ঘটিয়েছেন

আবেগপূর্ণ পুনর্মিলন

“স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়ার ঘটনা ছিল ঐ ঘটনা। সম্পর্কের পরিচয় ছিল খাঁটি। আমি তো বেশ কয়েকবার কেঁদেই ফেলেছিলাম,” বলছিলেন ডেভিড লাখান, নিজের পরিবার সম্পর্কে জানতে পারা ছিল দুর্দান্ত এক অনুভূতি।”

লাখানের আত্মীয়-স্বজনেরা তাদের গ্রামে যাওয়ার আগে ভারতের পবিত্র শহর কাশীতে তার সাথে প্রথম দেখা করে।

“আমরা আশাই করিনি যে পুরো গ্রাম বেরিয়ে এসে আমাদের অভ্যর্থনা জানাবে। আমাদের গলয় মালা পরিয়ে দেবে,” বলছিলেন ডেভিডের স্ত্রী গীতা লাখান।

এরপর তারা লাখানের ভাইয়ের নাতি-পুতিদের সাথে দেখা করেন। এরা গাজীপুরে লাখান যে বাড়িটিতে থাকতেন সেই জায়গার ওপর নতুন বাড়ি তৈরি করেছিলেন।

বাস্তবে দেখা হওয়ার আগেই পরিবারগুলি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে একে অপরের সাথে কথা বলেছে। আর এখন অনুবাদের অ্যাপ ব্যবহার করে তারা ভাষা-গত বাধাও কাটিয়ে উঠেছে এবং নিজেদের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।

গীতা লাখান বলছিলেন, তার ভারতীয় আত্মীয়দের সাথে তিনি অনেক মিল খুঁজে পেয়েছেন এবং বিশ্বাস করেন যে এটা ঘটেছে কারণ চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকরা তাদের সংস্কৃতি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন।

“আমার মা যে তরকারি রান্না করতেন তার সুগন্ধ ভারতে আমাদের মতোই। আমরা একই গান গাই। আমার বাবা-মা হিন্দিতে কথা বলতেন। আমি হিন্দি পারিনা, কিন্তু আমি হিন্দিতে প্রার্থনা করি।“

গীতা এবং ডেভিড লাখান বলেন, তারা এখন তাদের সাত-বছর বয়সী নাতিকে তাদের ভারত ভ্রমণের গল্প করছেন। তাদের আশা যে সেও তার ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহী হবে।

আর শামসু দ্বীন অবসর নেওয়ার পরেও তিনি সেই কাজটি করে যাচ্ছেন যা তাকে এখনও উত্তেজিত করে তোলে। ১৯৯৬ সালে তিনি ছয় মাসের জন্য ভারতে যান এবং আরও ১৪টি পরিবারের ব্যাপারে অনুসন্ধান চালান।

শামসু দ্বীনের বয়স এখন ৭৬-বছর। তিনি বলেন, যে কাজ তিনি করছেন সেটা তাকে এখনও “সুখ আর সুস্বাস্থ্য” এনে দেয়।

“প্রতিটি কেস হচ্ছে একেকটি ধাঁধার মতো। দুটি কেস কখনই এক রকম হয় না। যতক্ষণ আমার দেহে শক্তি থাকবে, আমার স্মৃতিশক্তি কাজ করবে, এটা আমি করে যাব। এটা আমাকে বাঁচতে সাহায্য করে,” তিনি বলেন।

কিন্তু নিজের পারিবারিক ইতিহাস জানার যে প্রচেষ্টা, সে সম্পর্কে তিনি কী বলবেন?

“ত্রিনিদাদ ও টোবেগো হচ্ছে আমার দেশ। আমার সন্তান ও নাতি-নাতনিরা ক্যানাডায় থাকে। ত্রিনিদাদ ও ভারত – দুটি দেশের সাথেই তারা বংশগত এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।

“আমি বিশ্বাস করি পুরো মানবজাতির মতোই, আমরা সবাই অভিবাসী। আফ্রিকা থেকে শুরু করে ভারত, তারপর ত্রিনিদাদ, তারপর ক্যানাডা এবং এর পর কোথায়, তা জানিনা। কিন্তু আমাদের অস্তিত্বের গভীরে বাঁধা রয়েছে ভারতীয় ঐতিহ্যের বিনি সুতো,” বললেন শামসু দ্বীন।

6 comments
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: বাংলাদেশের নাগরিকত্বের পাশাপাশি আরও ১০১টি দেশের নাগরিক হতে পারবেন বাংলাদেশিরা। বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের দ্বৈত নাগরিকত্ব সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে এসআরও (স্টেটরি রেগুলেটরি অর্ডার) জারির প্রস্তাবে মন্ত্রিপরিষদ অনুমোদন দিয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) এই অনুমোদন দেওয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে এই বৈঠক হয়। পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

সচিব জানান, বাংলাদেশিরা ইউরোপসহ ৫৭টি দেশের নাগরিক হতে পারতেন। এখন আরও ৪৪টি নতুন দেশ যুক্ত হয়েছে। ফলে এখন বাংলাদেশিরা নিজ দেশের পাশাপাশি মোট ১০১টি দেশের নাগরিক হতে পারবেন।

নতুন ৪৪টি দেশের মধ্যে রয়েছে– আফ্রিকা মহাদেশের ১৯টি দেশ, দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ১২টি দেশ, ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ১২টি দেশ ও ওশেনিয়া মহাদেশের একটি দেশ। দেশগুলো হলো- মিসর, দক্ষিণ আফ্রিকা, কেনিয়া, আলজেরিয়া, সুদান, মরক্কো, ঘানা, রুয়ান্ডা, বুরুন্ডি, তিউনিসিয়া, সিয়েরা লিয়ন, লিবিয়া, কঙ্গো, লাইবেরিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইরিত্রিয়া, গাম্বিয়া, বতসোয়ানা, মরিশাস, ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়া, ভেনিজুয়েলা, সুরিনাম, আর্জেন্টিনা, পেরু, ইকুয়েডর, চিলি, উরুগুয়ে, গায়ানা, কিউবা, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, হাইতি, বাহামা, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, ডমিনিকা, সেন্ট লুসিয়া, বার্বাডোস, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, গ্রেনাডা, সেন্ট কিটস ও নেভিস, ফিজি।

এছাড়া সচিব আরও জানান, বাংলাদেশ থেকে ১১৩৫ জন সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে কাতার। এমন বিধান রেখে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে একটি চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। বাংলা ট্রিবিউন

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ঢাকা: জাতীয় সংসদের বিদ্যমান সীমানা হুবহু ঠিক রেখেই ৩০০ নির্বাচনি আসনের সীমানা পুন:নির্ধারনে খসড়া প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার নির্বাচন কমিশন এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।

বহুল আলোচিত-সমালোচিত কে এম নূরুল হুদা কমিশন বিগত ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল সংসদীয় আসনের সীমানা প্রকাশ করেছিল। সেটিকেই পুন:নির্ধারিত সীমানা আখ্যা দিয়ে এ খসড়া প্রকাশ করলো বর্তমান কমিশন। এতে নতুন সৃষ্ট হওয়া উপজেলা ও ওয়ার্ড অন্তর্ভূক্তির কারনে সাতটি আসনের সীমানায় নামগত পরিবর্তন এসেছে। তবে বাস্তব সীমানায় কোনো রদবদল আসেনি।

খসড়া এ সীমানা নিয়ে কারও দাবি বা আপত্তি থাকলে তা আগামী ১৯ মার্চের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও এ খসড়া সীমানা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে।

যে সাতটি আসনে নামগত পরিবর্তন এসেছে সেগুলো হলো- মাদারীপুর-৩, ময়মনসিংহ-৪, সুনামগঞ্জ-১ ও ৩, সিলেট-১ ও ৩ এবং কক্সবাজার-৩।

ইসি সূত্র জানায়, আইনে আদমশুমারির পর জনসংখ্যার যতটা সম্ভব বাস্তব বন্টনের ভিত্তিতে সীমানা পুন:নির্ধারণের কথা বলা হলেও তা মানা হয়নি। এবারের জনশুমারির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ি, দেশের অন্তত ৭৫টি সংসদীয় আসনে সংশ্লিষ্ট জেলার গড় জনসংখ্যার চেয়ে ২৬ থেকে ৮৮ শতাংশ পার্থক্য রয়েছে। এর মধ্যে ১৮ আসনে জনসংখ্যার ব্যবধান ৫১-৮৮ শতাংশ।

‘বিতর্ক’ এড়াতে জনসংখ্যার এত বড় ব্যবধান রেখেই এ খসড়া প্রকাশ করা হলো। অর্থাৎ জনশুমারির এ প্রতিবেদনকে আমলে নেয়নি ইসি। এছাড়া ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশন ৪০টি আসনের সীমানা পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছিল তৎকালীন কমিশন।

পরবর্তীতে ২৫টি আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনে। ওই সীমানা নিয়েও প্রশ্ন ওঠেছিল। সেই সীমানাকেই মূলভিত্তি ধরেছে বর্তমান কমিশন। এছাড়া আইনে ইসিকে বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া থাকলেও তা করা হয়নি।

তবে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, খসড়া প্রকাশের পর অংশীজনের দাবি-আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে যৌক্তিক ক্ষেত্রে সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি তারা বিবেচনা করবে।

খসড়া সীমানা নির্ধারণে ইসি পাঁচটি কার্যপদ্ধতির কথা জানিয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- প্রতিটি জেলার ২০১৮ সালে নির্ধারিত মোট আসন সংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা; প্রশাসনিক ইউনিট বিশেষ করে উপজেলা এবং সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের ওয়ার্ডের যথাসম্ভব অখণ্ডতা রাখা; নতুন সৃষ্ট, সম্প্রসারিত ও বিলুপ্ত প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভূক্ত করা এবং ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিবেচনা করা। এ কারণে সাতটি আসনের সীমানায় পরিবর্তন এসেছে।

সেগুলোর মধ্যে কালকিনি উপজেলা নিয়ে গঠিত মাদারীপুর-৩ আসনের সঙ্গে ডাসার উপজেলা যুক্ত করা হয়েছে। কালকিনি উপজেলা বিভক্ত করে সরকার কালকিনি ও ডাসার উপজেলা করেছে। ময়মনসিংহ-৪ আসনে ময়মনসিংহ সদর আসনের সাথে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন যুক্ত করা হয়েছে।

ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-১ আসনে নতুন সৃষ্ট মধ্যনগর উপজেলা যুক্ত করা হয়েছে।  জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা নিয়ে গঠিত সুনামগঞ্জ-৩ আসনের দক্ষিণ সুরমার নাম পরিবর্তন করে সরকার শান্তিগঞ্জ উপজেলা করায় ওই নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

সিলেট সিটি করপোরেশন ও সিলেট সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত সিলেট-১ আসনের সদর উপজেলার একটি ইউনিয়ন এর তিনটি ইউপির আংশিক সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় এ আসনে পরিবর্তন হয়েছে।

এক্ষেত্রে খসড়ায় সিলেট-১ আসনে সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ২৭ নম্বর  এবং ৩১ থেকে ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড ও সদর উপজেলা নিয়ে গঠন করা হয়েছে। একই কারণে সিলেট-২ আসনে পরিবর্তন হয়ে সিটি করপোরেশনের ২৮ থেকে ৩০ ও ৪০ থেকে ৪২ নম্বর ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত হয়েছে। কক্সবাজার সদর ও রামু উপজেলা আসন নিয়ে গঠিত কক্সবাজার-৩ আসনের সদর উপজেলা ভেঙ্গে ঈদগাঁও নামে নতুন আরেকটি উপজেলায় করায় এই নামটিও যুক্ত হয়েছে ইসির খসড়া সীমনায়।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

জ্যাভেলিন

যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে দ্রুত এগিয়ে গিয়েছিল রুশ বাহিনী। সে সময় ইউক্রেনের জন্য এমন কিছুর প্রয়োজন ছিল, যা প্রতিপক্ষের হামলা ঠেকাতে পারবে। আর সে কাজটিই বেশ ভালোভাবে করতে পেরেছে জ্যাভেলিন। এটি কাঁধ থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ট্যাংকবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র। ব্যক্তি একাই এটি পরিচালনা করতে পারেন। ব্যবহারের পদ্ধতি সহজ হওয়ার কারণে এ অস্ত্রের গ্রহণযোগ্যতাও বেশি। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন ও রেথিয়ন যৌথভাবে ক্ষেপণাস্ত্রটি তৈরি করেছে।

লকহিড মার্টিনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার আগে ডিসপ্লেতে কার্সর দিয়ে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে দিতে হয়। জ্যাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর এটি লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছানোর আগেই পরিচালনাকারী ব্যক্তি নিরাপদ অবস্থানে সরে যেতে পারেন। এতে তিনি পাল্টা হামলা থেকেও রেহাই পান।

ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে রুশ বাহিনী যখন শহর এলাকাগুলোয় ঢোকার চেষ্টা করছিল, তখন জ্যাভেলিন ব্যবহার করে ভালো ফল পেয়েছিল ইউক্রেন। জ্যাভেলিন অপারেটর কোনো ভবন কিংবা গাছের আড়াল থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে নিরাপদে সরে যেতে পারতেন।

রুশ ট্যাংকের দুর্বল জায়গাগুলোও ভেদ করতে পেরেছে জ্যাভেলিন। কারণ, জ্যাভেলিন ছোড়ার পর তা বক্ররেখার মতো ওপরের দিকে উঠে যায় এবং ওপর থেকে নিচে থাকা লক্ষ্যবস্তুর ওপর আছড়ে পড়ে।

যুদ্ধের শুরুর দিকে বেশ কিছু রুশ ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেখা গিয়েছিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জ্যাভেলিনের আঘাতের কারণে এমনটা হতে দেখা গেছে।

জ্যাভেলিনের ভূমিকা এতটাই ভালো ছিল যে যুদ্ধের আড়াই মাসের মাথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আলাবামায় এর উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছিলেন। ইউক্রেনের সুরক্ষায় সহায়তার জন্য সেখানকার কর্মীদের প্রশংসা করেছিলেন তিনি।

জ্যাভেলিন ব্যবহারের আরও একটি সুবিধা হলো এটি রাজনৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য। অন্টারিওর ব্রক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাইকেল আর্মস্ট্রং দ্য কনভারসেশনে লিখেছিলেন, কম খরচ এবং প্রতিরক্ষামূলক ব্যবহারের কারণে অন্য দেশগুলোর জন্য এগুলো সরবরাহ করাটা রাজনৈতিকভাবেও সহজ।

হিমার্স রকেট-ব্যবস্থা

হিমার্স রকেট-ব্যবস্থা  ছবি: রয়টার্স ফাইল ছবি

হিমার্স

এর পুরো নাম এম১৪২ হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম। মার্কিন কোম্পানি লকহিড মার্টিন হিমার্স–ব্যবস্থার প্রস্তুতকারক ও স্বত্বাধিকারী। আসলে হিমার্স–ব্যবস্থা হচ্ছে একটি পাঁচ টন ওজনের ট্রাক, যেখানে একটি উৎক্ষেপণব্যবস্থা আছে এবং তা থেকে প্রায় একই সঙ্গে ছয়টি রকেট ছোড়া যায়। যুদ্ধক্ষেত্রের সম্মুখ সারিতে হামলা চালিয়ে পাল্টা হামলা এড়াতে এটি দ্রুত অবস্থান বদল করে ফেলতে পারে।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান জানুয়ারিতে লেখেন, ‘যুদ্ধের শুরুর ধাপে জ্যাভেলিন যেমন খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, তেমনি পরবর্তী ধাপে হিমার্স গুরুত্বপূর্ণ ওঠে।’

হিমার্স যে ধরনের যুদ্ধাস্ত্র ছোড়ে, সেগুলোকে গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম (জিএমএলআরএস) নামে অভিহিত করা হয়। এসব রকেট ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার (প্রায় ৫০ মাইল) দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। জিপিএস–ব্যবস্থায় পরিচালিত হওয়ার কারণে হিমার্স অত্যন্ত যথার্থভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে পারে।

গত জুলাইয়ে রুশ সাংবাদিক রোমান সাপেনকভ বলেছিলেন, তিনি খেরসন বিমানবন্দরে একটি রুশ ঘাঁটিতে হিমার্স রকেট–ব্যবস্থা দিয়ে হামলা হতে দেখেছেন। খেরসন এলাকাটি তখন রুশ বাহিনীর দখলে ছিল।

রোমান সাপেনকভ লিখেছেন, ‘ছোট একটি জায়গার ওপর একসঙ্গে পাঁচ থেকে ছয়টি রকেট এসে পড়ছে, এমন দৃশ্য দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।’

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের অধ্যাপক ইয়াজিল হেনকিন বলেন, হিমার্সের দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আছে। এ অস্ত্র দিয়ে হামলার কারণে রুশ বাহিনী তাদের গোলা বারুদের ভান্ডার সরিয়ে নিয়েছিল। এতে যুদ্ধক্ষেত্রের খুব কাছে গোলা বারুদ পাওয়াটা রুশ বাহিনীর জন্য খুব একটা সহজ ছিল না। যুদ্ধ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পাওয়াটা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছিল।

সেতুর মতো লক্ষ্যবস্তুগুলোয় দীর্ঘ পাল্লার এই রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানোর কারণে রুশ সরবরাহ প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

তুরস্কের বেরাকতার কোম্পানির তৈরি টিবি২ ড্রোন

তুরস্কের বেরাকতার কোম্পানির তৈরি টিবি২ ড্রোন ছবি: এএফপি

বেরাকতার টিবি২ ড্রোন

এ ড্রোন তুরস্কের নকশায় তৈরি। ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এটি বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত চালকবিহীন ড্রোনগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে।

এ ড্রোন অপেক্ষাকৃত সস্তা। এটিতে অভিযানের ভিডিও রেকর্ড করা থাকে। এসব ভিডিওতে দেখা গেছে, এ ড্রোন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার নিয়ন্ত্রিত রকেট এবং স্মার্ট বোমা ছুড়ে রুশ সাঁজোয়া যান, গোলাবারুদ ও সরবরাহ–ব্যবস্থা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আটলান্টিক কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক আরন স্টেইন লিখেছেন, টিবি২–এর ভাইরাল ভিডিওগুলো টিকটক যুগে আধুনিক যুদ্ধাবস্থার যথার্থ দৃষ্টান্তকে উপস্থাপন করছে। বেরাকতার টিবি২ কোনো জাদু অস্ত্র নয়, তবে এটি যথেষ্ট রকমে ভালো।

তবে বেরাকতার টিবি২ দুর্বল দিকও আছে। আরন স্টেইন মনে করেন, এর গতি কম। আকাশ প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এর সক্ষমতাও কম।

যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতিও তেমন ইঙ্গিতই দিচ্ছে। গোয়েন্দা প্রতিরক্ষাবিষয়ক ওয়েবসাইট ওরিক্সের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেন যে ৪০ থেকে ৫০টি টিবি২ ড্রোন পেয়েছিল, তার মধ্যে ১৭টি যুদ্ধক্ষেত্রে ধ্বংস হয়ে গেছে।

তবে স্টেইন মনে করেন, ড্রোনগুলো সস্তা হওয়ায় এগুলো ধ্বংস হলেও খুব একটা কিছু যায় আসে না। সস্তা হওয়ায় এসব ড্রোন নষ্ট হলে আবার সহজে নতুন ড্রোন নিয়ে আসা যায়।

টিবি২ নিয়ে ইউক্রেনে একটি মিউজিক ভিডিও তৈরি হয়েছে। আর তাতেই বোঝা যায় টিবি২ ইউক্রেনীয়দের কাছে কতটা জনপ্রিয়। প্রথম আলো

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে – মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী
ঢাকা, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ঃ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী বলেছেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। অতীতের মত সরকারের কলাকৌশল আর তালবাহানা নির্বাচন জাতি আর দেখতে চায় না। সরকার যত উন্নয়নের কথা বলে ততই দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির উন্নয়ন জনগণ চায় না।
জাতির মুক্তির জন্য খেলাফত মজলিসের ৮ দফা মানতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন নীতি বন্ধ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত আলেম উলামা ও রাজনৈতিক
নেতা-কর্মীদের মুক্তি দিতে হবে ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী আদায়ে দেশব্যাপী জেলা-মহানগরীতে বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হকের সভাপতিত্বে ও মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবুল হোসেন ও মুফতি আজীজুল হকের যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের
যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাব উদ্দিন আহমদ খন্দকার, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফ উদ্দিন আহমদ খন্দকার, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য হাজী নূর হোসেন, শ্রমিক মজলিসের সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল করিম, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক কে এম ইমরান হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা নূরুল হক, মাওলানা আনোয়ারুল করিম, আলহাজ্ব আমীর আলী হাওলাদার, এনামুল হক হাসান, মুন্সী মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মাওলানা ফরিদ আহমদ হেলালী, হাফেজ মুহাম্মদ সালমান, ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান প্রমুখ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল বলেন, দেশ এক সন্ধিক্ষণ অতিক্রম করছে। মানুষ ভোট-ভাতের অধিকার বঞ্চিত, ইসলামী শিক্ষা সংকোচন করা হচ্ছে, বেকার সমস্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এসব সংকট উত্তরণে খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী মেনে নিতে হবে। জনগণের সরকার কায়েমে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশের পর এক বিক্ষোভ মিছিল জাতীয় প্রেস ক্লাব, কদম ফোয়ারা, পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর পানির ট্যাকিংর সামনে এসে শেষ হয়।
এদিকে চলমান সংকট নিরসনে খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী আদায়ে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সিলেট মহানগরী, সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট, দক্ষিণ সুরমা, জকিগঞ্জ, বিশ্বনাথ, জৈন্তাপুর, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ থানায়, মৌলভীবাজার শহর, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, নারয়নগঞ্জ,
মানিকগঞ্জ, সাভার, চট্টগ্রাম মহানগরী ও উত্তর জেলা, কক্সবাজার, পটুয়াখালী, বরিশাল মহানগরীসহ বিভিন্ন জেলা ও মহানগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৮ দফা দাবী হচ্ছে- ১. ধর্মীয় শিক্ষা সংকোচন নীতি বন্ধ ও বিতর্কিত পাঠ্যক্রম বাতিল করা ২. দল নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের
অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা ৩. নির্বাচনে সবার জন্যে সমান সুযোগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা: ৪. দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার বন্ধ
রাখা ৫. গ্রেফতারকৃত আলেম উলামা ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার করা ৬. রাজনৈতিক সভা-সমাবেশের অবাধ সুযোগ নিশ্চিতকরণ ৭. পণ্যমূল্য কমিয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব ও দুর্নীতি নির্মূল করা ও ৮. বেকার সমস্যা সমাধান ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ দান।
0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail

ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব – ড. আহমদ আবদুল কাদের
ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩: খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, তুরস্ক-সিরিয়ার ভয়াবহ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। ভয়াবহ ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এ পর্যন্ত ৪৬ হাজারেরও বেশী মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। বিধ্বস্ত ঘড়বাড়ি আর আহত মানুষের সংখ্যা অগনিত। এ মহা বিপর্যয়ে বিশ্ববাসীকে সামর্থানুয়ায়ী আর্তমানবতার পাশে দাঁড়াতে হবে। আজ বারিধারাস্থ তুরস্কের ত্রাণ সমন্বয় (টিকা) অফিসে খেলাফত মজলিসের পক্ষে থেকে ভূমিকম্প দুর্গতদের জন্য উপহার সামগ্রী হস্তান্তরের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আজ ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় বারিধারাস্থ তুরস্কের ত্রাণ সমন্বয় অফিসে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল তুর্কি দূতাবাসের রিলিজিয়াস সার্ভিস কোঅর্ডিনেটর ওজগুর ওজুরেক এর কাছে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য খেলাফত মজলিসের উপহার সামগ্রী হস্তান্তর করেন। উপহার সামগ্রীর মধ্যে ছিলো কম্বল, জ্যাকেট ও সোয়েটার। খেলাফত মজলিসের প্রতিিিনধ দলে অন্যান্যের মধ্যে সংগঠনের নায়বে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্মমহাসচিব ড. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক মোঃ আবদুল জলিল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি মাওলানা ফারুক আহমদ ভূঁইয়া, শ্রমিক মজলিসের সহসভাপতি আলহাজ্ব আমির আলী হাওলাদার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আনিসুর রহমান, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় ছাত্র কল্যাণ সম্পাদক মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থি ছিলেন।

এ সময় ভূমিকম্পে নিহতেদর মাগফিরাত ও আহতেদর আশু আরোগ্যের জন্য সাহায্য কামনা করে দোয়া-মোনাজাত পরিচালনা করেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী।

পরে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করে বারিধারাস্থ তুর্কী দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত বরাবর খেলাফত মজলিসের একটি শোক বার্তা পৌছে দেয়া হয়।

0 comment
0 FacebookTwitterPinterestEmail