শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশী হত্যার শিকার হওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। তারা অবিলম্বে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছে। একই সাথে আগ্রাসন রুখে দিতে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
খেলাফত মজলিস : গতকাল এক বিবৃতিতে দলটির আমির মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে একের পর এক হত্যাকাণ্ড চালিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বারবার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। সম্প্রতি দু’জন বাংলাদেশী নাগরিককে তারা হত্যা করেছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত হয়েছেন আরো অনেকে। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশ নিরস্ত্র নিরপরাধ মানুষকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দিতে পারে না। কিন্তু ভারত সেটি দীর্ঘদিন করে আসছে। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই নিপীড়নকারী দেশের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে। ফেলানীসহ সীমান্তে বিএসএফ যতগুলো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে সব ক’টির সুষ্ঠু বিচার করতে হবে। আর একটি লাশও আমরা সীমান্তে দেখতে চাই না। বর্তমান সরকারকে ভারতীয় সব আগ্রাসন রুখে দিতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : সংগঠনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, ভারত এখনো সীমান্ত হত্যা বন্ধ করেনি। প্রয়োজনের সময় পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করে আর বর্ষাকালে বাঁধ ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে পানিতে ডুবিয়ে মারে। বন্ধুরূপী শত্রুর বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনতাকে সোচ্চার থাকতে হবে। ভারত বাংলাদেশকে হুমকি দিলে বাংলাদেশ সরকারকেও সব প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা ভারতের সাথে যত গোপন চুক্তি করেছে, তা জনসম্মুখে প্রকাশ করে চুক্তিগুলো বাতিল করতে হবে। সম্প্রতি ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের বাংলাদেশ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচ্ছন্নভাবে যুদ্ধের হুমকি দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা কারো সাথে শত্রুতা চাই না, সবার সাথে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু ভারত যদি আগ বাড়িয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করতে চায় তাহলে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জীবনবাজি রেখে লড়াই করতে রাজি।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গত ৯ সেপ্টেম্বর ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কান্তিভিটা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে জয়ন্ত কুমার সিং নামে ১৪ বছর বয়সী এক বাংলাদেশী কিশোর নিহত হয়। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১৩ বছরের কিশোরী স্বর্ণা দাশ নিহত হয়। পরপর এই দুই হত্যার ঘটনার মধ্য দিয়ে মোদি সরকার মূলত নতুন করে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ও শিশু-কিশোরদের হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ ভারতের এ রকম বর্বর আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মোদি সরকারকে সীমান্ত হত্যা দ্রুত বন্ধ করতে হবে এবং অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে শক্তিশালী কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে।