শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাসমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই বলে জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। তিনি বলেন, সামগ্রিক সংকট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে। সবকিছু পুনরায় মূল্যায়ন করতে হবে। মতাদর্শিক অবস্থান থেকে ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে রাজনীতি, সমাজনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, আমাদের কর্মকাণ্ড, কৌশল, নীতি ও পন্থা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। এ সময় অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জরুরি।
‘জাতীয় বহুমুখী সংকট উদ্ঘাটন ও নিরসনকল্পে কল্যাণরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এই বৈঠকের আয়োজন করে।
চরমোনাই পীর আরো বলেন, এমন অবস্থায় সমাধান হতে পারে বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য সমর্থিত মানবতার মুক্তির পথ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। দুর্নীতি, দুঃশাসন, সন্ত্রাস মুক্ত, সুখী সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্রই সকল শ্রেণি, পেশা ও ধর্মের মানুষের রাজনৈতিক, নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার নিশ্চিত করতে পারে। সময়ের একান্ত প্রয়োজন কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশের গণতন্ত্র আজ নির্বাসিত না, সমাহিত। দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যারা সরকারের উচ্ছিষ্টভোগী তারা আমাদের সঙ্গে আসবে না।
তিনি আরো বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মিলিতভাবে ঐক্য হয়ে গেছে। কিন্তু জনগণের সামনে আমরা ঐক্যটা দৃশ্যমান করতে পারছি না। আমাদের আহ্বানে জনগণ সাড়াও দিচ্ছে। সরকারকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ দেখিনা।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, এই দেশ এবং জাতিকে বাঁচানোর জন্য সকালের ঐক্য প্রয়োজন। আজ থেকে এক মাস আগে নির্বাচনের নামে যে প্রহসন হয়েছিল তা আমরা সবাই দেখেছি। কিন্তু এই সরকারের বিন্দুমাত্র কোনো অনুশোচনা নেই।
তিনি আরো বলেন, এদেশের হাজারো বিরোধী দলের নেতারা জেল খানায় আটক। যদিও তাদের মনে বিন্দুমাত্র হতাশা নেই। আমি মনে করি- বিগত দিনের আন্দোলনগুলো কোনোভাবে ব্যর্থ হয়নি। আজকের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব অতীতের সব দ্বন্দ্ব থেকে মারাত্মক আকার ধারণা করেছে। এসব হচ্ছে পার্শ্ববর্তী দেশের প্রেসক্রিপশনের মাধ্যমে। আমরা গণতান্ত্রিক উপয়ে সরকারের এই স্বৈরশাসনের দাঁতভাঙ্গা জবাব দেব।
দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে বিদ্রোহ করা ছাড়া কোন উপায় নেই মন্তব্য করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, পুরো দেশটাই ইবলিশ শয়তানের হাতে পড়ে গেছে। এখন দেশটাকে কিভাবে রক্ষা করতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। এখানে আমাদের সঠিক কর্মসূচি নিতে হবে। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ আমাদেরকে সমর্থন জানিয়েছে। তাই এখন এমন এক কর্মসূচি পালন করতে হবে যার মাধ্যমে এই সরকারের হায়নার থাবা থেকে দেশকে রক্ষা করা যায়।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইয়াকুব আলী, খেলাফত মজলিশ এর মহাসচিব অধ্যাপক ড. আহমদ আবদুল কাদের, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাকিব মুহাম্মাদ নাসরুল্লাহ, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ এর যুগ্ম মহাসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. নেয়ামুল বশীর, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মিয়া মশিউজ্জামান, মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।