শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সহ চারজনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে আজ। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ হবে। ড. ইউনূসের পক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ করবেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। অপরদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের পক্ষে থাকবেন এডভোকেট খুরশীদ আলম খান। গত ৩১শে আগস্ট এই মামলার সাক্ষগ্রহণের জন্য আজকের দিন নির্ধারণ করেন আদালত। 
এদিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে  শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিচার কার্যক্রমে সরকার পক্ষে আইনি লড়াইয়ে নতুন আইনজীবী নিয়োগ নিয়ে গতকাল নাটকীয়তা হয়। এই মামলায় আইনজীবী হিসেবে লড়ছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী এডভোকেট খুরশীদ আলম খান। সম্প্রতি নতুন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলীকে এই মামলায় আইনজীবী হিসেবে যুক্ত করা হয়। গত সপ্তাহে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের আইনজীবী হিসেবে শ্রম মন্ত্রণালয় তাকে নিযুক্ত করে। কয়েক দিন আগে তাকে নিয়োগ দেয়া হলেও মামলার বর্তমান আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জানান, তিনি আর এই মামলায় লড়বেন না। অন্য আইনজীবী নিয়োগ দেয়ায় তিনি দায়িত্বে থাকতে চান না বলে উল্লেখ করেন। 

রাতে আইনজীবী খুরশীদ আলম জানান, এই মামলায় তিনিই একমাত্র আইনজীবী হিসেবে লড়বেন।

মঙ্গলবার তিনি শুনানিতে অংশ নেবেন। তবে নতুন নিয়োগ দেয়া আইনজীবীর বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি তিনি। নতুন নিয়োগ দেয়া আইনজীবীকে প্রত্যাহার করা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আইনজীবী হায়দার আলী জানিয়েছেন, তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এমন কোনো তথ্য তিনি পাননি। 
সোমবার খুরশিদ আলম খান সুপ্রিম কোর্ট এনেক্স ভবনের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে করা মামলায় আমি আইনজীবী হিসেবে কাজ করছি। শুনেছি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে আরও একজন আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে আমি তা জানি না। যদি অন্য কাউকে নেয়া হয়, তবে আমি থাকবো না। কারণ, এই মামলা পরিচালনায় আমার একটা প্রস্তুতি আছে আমার মতো করে। সেখানে আর একজন আইনজীবী যদি নেয়া হয়, তাহলে তার ভিন্ন প্রস্তুতি ও ভিন্ন স্টাইলে উপস্থাপন হতে পারে। তাই অন্য কেউ যুক্ত হলে আমি থাকবো না।

এদিকে কলকারখানার পক্ষে নিয়োগ পাওয়া নতুন আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী মানবজমিনকে বলেন, কলকারখানা কর্তৃপক্ষ আমাকে নিয়োগ দেয়ার পর ড. ইউনূসের মামলাতেই আমরা দু’জনে একসঙ্গে কাজ করেছি। এই মামলার বাদীর সাক্ষীও নিয়েছি। গত ৩১শে আগস্ট সাক্ষীর বাবা মারা যাওয়ায় সময় আবেদন করে সময় নিয়েছি। এখন উনি এ কথা কেন বলছেন জানি না। তবে আমি আশা করি উনি এই মামলায় যাবেন। একটা মামলায় তো একাধিক আইনজীবী থাকতেই পারেন। এক্ষেত্রে উনার একার জায়গায় আরেকজন আইনজীবী হলে শক্তিটা বাড়বে বলেই আমি মনে করি।

নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এক শ্রম পরিদর্শক। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। গত ৬ই জুন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক। মামলায় ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন। অপরদিকে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।

আরো পড়ুন ...