শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নানাভাবে আলোচিত। একদিকে সামনে নির্বাচন, অন্যদিকে ভূ-রাজনৈতিক চাপে নাজেহাল বিশ্ব অর্থনীতির প্রভাবে দেশে রিজার্ভ কমেছে। একইসঙ্গে বিপদ বাড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি আর শর্তের জালে বেঁধেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
এই বাজেট বাস্তবায়নের বড় চ্যালেঞ্জ সুদের বাড়তি চাপ। আগামী অর্থবছরে সুদবাবদ খরচ হবে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮২ হাজার কোটি টাকা যাবে অভ্যন্তরীণ সুদে। আর বিদেশি ঋণে গুনতে হবে ১২ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকা। ডলারের রেট বাড়ায় ২০ ভাগ অর্থ বেশি লাগবে বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধে।
মূলত ঋণ নিয়ে চাপ সামাল দিচ্ছে বাংলাদেশ। চলতি অর্থবছরে এরইমধ্যে ব্যাংক থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে সরকার। নতুন বাজেটে এই ঋণের লক্ষ্য প্রায় দেড় লাখ কোটি ছুঁইছুঁই।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণের টাকা ব্যবহারে সাবধান হতে হবে। ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎসের চেয়ে এগিয়ে রাখতে হবে বিদেশি সহযোগীদের।সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, আগে আমরা ডলারে সুদ বা বিদেশি যে ঋণ পরিশোধ করতাম, সেটা তো এখন ১৫-২০ টাকা বেড়ে গেছে। এটা একটা অতিরিক্ত বোঝা হিসেবে আসবে, টাকার অঙ্কে। যে প্রকল্পের জন্য ঋণ নেয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করে যদি অর্থনৈতিক সক্ষমতা তৈরি করি, তাহলে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বাড়বে। তা টাকার অঙ্কেও বাড়বে, ডলারেও বাড়বে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য, চলতি বছর ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৮ লাখ কোটি টাকা। যা মোট জিডিপির ৩৪ শতাংশ। দেশে এই মুহূর্তে মাথাপিছু ঋণ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। গত এক বছরে এই পরিমাণ আরও বেড়েছে। এমন অবস্থায় প্রশ্ন হচ্ছে, নতুন ঋণ আর সুদের পরিমাণ বাড়লে কীভাবে সামাল দেবে বাংলাদেশ?
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. জামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার যদি ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়, এটা তো মারাত্মক। এছাড়া সুদের ভার তো আছে। আর বিদেশের ঋণের ক্ষেত্রে সরকার যদি দীর্ঘমেয়াদে ঋণ নেয়, তখন অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হারের চেয়ে সেটি যদি কম হয়, তাহলে ঠিক আছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশে মুদ্রার পরিমাণ ১৭ লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে ১৫ লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা আমানত। বাকি টাকা জনগণের হাতে নগদ হিসেবে রয়েছে। তৌহিদ হোসেন: যমুনাডটটিভি