শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্ম দিন আজ

বাংলা সাহিত্যের ধ্রুবতারা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা, গান, উপন্যাস ও গল্পে বাঙালি জেনেছে বীরত্বের ভাষা, দ্রোহের মন্ত্র।

বাঙালির সব আবেগ, অনুভূতিতে জড়িয়ে আছেন তিনি। আজ তার ১২৪তম জন্মজয়ন্তী। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘অগ্নিবীণার শতবর্ষ : বঙ্গবন্ধু চেতনার শানিতরূপ।’

নজরুলজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক। তিনি প্রায় তিন হাজার গান রচনা করেছেন এবং বেশিরভাগ গানেই তিনি সুরারোপ করেছেন।

এ গানগুলো নজরুলসংগীত নামে পরিচিত। ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম দুখু মিয়া। মাত্র নয় বছর বয়সে তিনি ১৯০৮ সালে বাবাকে হারান।

অল্প বয়স থেকে কাজী নজরুল লোকসংগীত রচনা শুরু করেন। ১৯১৭ সালের শেষভাগ থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত কর্মজীবনের মধ্যে তিনি ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সাধারণ সৈনিক করপোরাল থেকে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদারের পদে উন্নীত হন। যুদ্ধ শেষে কলকাতায় তিনি সাহিত্য ও সাংবাদিকতা জীবনের মূল কাজগুলো শুরু করেন। ১৯২২ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতাটির মধ্য দিয়ে তিনি সারা ভারতে সাড়া ফেলেন। একই বছর ২৩ নভেম্বর তার যুগবাণী প্রবন্ধগ্রন্থ বাজেয়াপ্ত এবং কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে তাকে কলকাতায় নেওয়া হয়। ১৯২৩ সালের ৭ জানুয়ারি আত্মপক্ষ সমর্থন করে চিফ প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেট সুইনহোর আদালতে কাজী নজরুল জবানবন্দি দেন। তার এ জবানবন্দি বাংলা সাহিত্যে ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ নামে বিশেষ সাহিত্য মর্যাদা লাভ করেছে।

১৯২১ সালের মাঝামাঝি কুমিল্লার প্রমীলা দেবীর সঙ্গে কাজী নজরুল প্রণয় থেকে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন। মধ্যবয়সে পিকস্ ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে নজরুল বাকশক্তি হারান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগে ১৯৭২ সালে তাকে বাংলাদেশে আনা হয়। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কর্মসূচি : বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৬টায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ও সচিবের নেতৃত্বে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিদ্রোহী কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবে। জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান বিকাল ৩টায় নজরুল স্মৃতিবিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশালে অনুষ্ঠিত হবে। তিন দিনের এ আয়োজন উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। স্মারক বক্তৃতা করবেন প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। সম্মানীয় বক্তা হিসাবে থাকবেন জাতীয় কবির দৌহিত্রী খিলখিল কাজী। সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি।

ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতিবিজড়িত কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা এবং চট্টগ্রামে জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনাসভা, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। নজরুল মেলা, নজরুলবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উৎসবমুখর করতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করবে।

জাতীয় পর্যায়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে।

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, শিল্পকলা একাডেমি, ছায়ানটসহ নানা সাংস্কৃতিক সংগঠন দিনটি উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। যুগান্তর

আরো পড়ুন ...