ঢাকা: ইরানে পুলিশের নির্যাতনে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর তীব্র আন্দোলন চলছে। আন্দোলন দমাতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইরান সরকার। সোমবার দেশটিতে অন্তত পাঁচ আন্দোলনকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি মানবাধিকার সংগঠন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৫ জন। এ খবর দিয়েছে সিএনএন।
খবরে জানানো হয়, ইরানের বর্তমান আন্দোলন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে নরওয়েভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হেনগাও অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস’। তারা জানিয়েছে, ইরানের কুর্দি অঞ্চলগুলোতে আন্দোলনের মাত্রা সবথেকে তীব্র। সেখানে সোমবার এক আন্দোলনে গুলি হলে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়া সমগ্র ইরানজুড়েই বিক্ষোভ দেখা গেছে। তাদের ওপরে লাঠিচার্জ এবং জলকামান ব্যবহার করা হয়েছে। এতে কয়েক ডজন আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত কমিশনার নাদা আল-নাশিফ এক বিবৃতিতে ইরানি পুলিশের এমন আচরণ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন।
তবে ইরান সরকারের দাবি, আন্দোলনকারীরাই পুলিশকে আক্রমণ করায় তারা বাধ্য হচ্ছেন কঠোর হতে। এক টুইটার পোস্টে তেহরানের গভর্নর মোহসেন মনসুরি বলেন, আন্দোলনকারীরা একেবারে প্রস্তুত হয়ে এসেছিলেন। তারা ছিলেন প্রশিক্ষিত।
উল্লেখ্য, এর আগে ইরানি পুলিশের হেফাজতে ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির মৃত্যু নিয়ে দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বললেও নিজেদের দায় এড়াতে চাইছে ইরান। গত সপ্তাহে হিজাব আইন না মানার অপরাধে তাকে গ্রেপ্তার করে দেশটির ‘নৈতিকতা পুলিশ’, যা হিজাব পুলিশ নামেই বেশি পরিচিত। কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোমায় চলে যান মাহসা আমিনি। এরপর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মৃত্যু হয় তার। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাকে গাড়িতে তুলেই প্রচণ্ড নির্যাতন করেছে পুলিশ।
পুলিশ প্রথম থেকেই আমিনিকে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, আমিনির আগে থেকেই শারীরিক সমস্যা ছিল এবং হৃদরোগের সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। তবে তার পিতা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তার মেয়ে পুরোপুরি সুস্থ ছিল এবং হৃদরোগেরও কোনো সমস্যা ছিল না। পুলিশ তার মেয়ের পায়ে ভয়াবহভাবে পিটিয়েছে। মানব জমিন